ঈদে মায়ের লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরল রিফাত
নিউজ ডেস্ক:
ঈদের সব কেনাকাটা করে মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল ১৪ বছরের ছোট্ট রিফাত। মনে ছিল অনেক স্বপ্ন। বাড়িতে ছোট বোনের সঙ্গে কাটাবে ঈদের সময়। কিন্তু মুহূর্তেই সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল। রিফাত বাড়ি ফিরেছে ঠিকই, কিন্তু সঙ্গে ছিল মায়ের লাশ।
ঈদের দিন উৎসব আর আনন্দে কাটানোর কথা থাকলেও রিফাতের পরিবারে নেই কোনো আনন্দ। দাদা ও নানাবাড়ি একই গ্রামে হওয়ায় দুই বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
রিফাতের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বালিগ্রামে। তার মায়ের নাম নিপা বেগম। তিনি নারায়ণগঞ্জে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
ঈদে কারখানা ছুটি হওয়ায় বুধবার দুপুরে মায়ের সঙ্গেই বাড়ি ফিরছিল রিফাত। কিন্তু বাংলাবাজার ঘাটে মাকে চিরদিনের জন্য হারিয়েছে ছেলেটি। মায়ের কোলে আর উঠতে পারবে না রিফাতের ছোট বোন সাত বছরের আজমীরা।
রিফাতের চাচা উজ্জ্বল ব্যাপারী জানান, কয়েক হাজার যাত্রীর সঙ্গে ফেরিতে ওঠেন রিফাত ও তার মা। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে ফেরিতে ওঠার পর সেখানে সাতটি যানবাহন ছিল। যানবাহন বের করতে গিয়ে যাত্রীরা চাপের মুখের পড়েন। পরবর্তীতে যানবাহন রেখে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ফেরির ডালা তুলতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ।
এ সময় ফেরিতে অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় এবং প্রচণ্ড গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফেরি বাংলাবাজার ঘাটের কাছে পৌঁছালে রিফাতের মাও অসুস্থবোধ করেন। তখন মায়ের জন্য কয়েক দফা পানি আনে রিফাত।
ঠিক সেই সময় ধাক্কা খেয়ে তিনটি শিশু পড়ে যায়। পরে তাদের কাঁধে তুলে রক্ষা করে ছোট্ট রিফাত। এমনকি একজন বৃদ্ধসহ কয়েকজনকে পানি দিয়ে জীবন বাঁচায়। কিন্তু নিজের মায়ের শেষ করুণ পরিণতিটা রুখতে পারেনি সে। চিরদিনের জন্য মাকে হারিয়ে ফেলে রিফাত।
রিফাত বলেন, আমি পানি পান করিয়ে অনেকের জীবন বাঁচিয়েছি। অথচ আমার মাকেই বাঁচাতে পারলাম না। মাকে নিয়ে ঈদের আনন্দ করতে আসছিলাম। কিন্তু মা তো এখন আর নেই।