বেনাপোলে নেশার টাকা না পেয়ে কুপিয়ে যখম করেছে শাশুড়ীকে

মোঃ সাগর হোসেনঃ
যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানাধীন নারানপুর গ্রামে নেশার টাকার জন্য শাশুড়ীকে কুপিয়ে  রক্তাক্ত যখম করেছে হারুন অর রশীদ নামে এক লম্পট জামাই। ঘটনাটি ঘটেছে বেনাপোলে নারানপুর গ্রামে।

শনিবার বেলা ১০ টার সময় বেনাপোলের নারানপুর গ্রামে শাশুড়ী মাছুরা খাতুনের কাছে নেশার টাকা দাবি করে জামাই । টাকা দিতে অস্বীকার করলে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করে  শাশুড়ি মাছুরাকে; এবং বাড়ির ধান লুট করে নিয়ে যায় লম্পট জামাই। মাছুরা রক্তাক্ত অবস্থায় নাভারণ বুরুজবাগান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এদিকে নেশাখোর জামাই হারুন তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন । তবে হারুন এর সাথে মাছুরার মেয়ের সম্প্রতি তালাক হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা।

বিষয়টি বেনাপোলে পোর্ট থানাকে অবহিত করেছে আহত মাছুরা বেগম। মাছুরা বেনাপোল পোর্ট থানার নারানপুর গ্রামের ফুল মোহাম্মাদের স্ত্রী। এবং জামাই হারুন একই গ্রামের আয়ুব আলীর ছেলে।

স্থানীয় বিল্লাল হোসেন বলেন, হারুন একজন নেশাগ্রস্থ মানুষ। সে তার শাশুড়ীর কাছে নেশার টাকা না পেয়ে শাশুড়ী সহ ওই পরিবারের সকলকে মারধর করে। নেশার টাকার জন্য প্রায় তার স্ত্রী স্বপ্নাকে মারধর করত। দীর্ঘ দিন ধরে নির্যাতনের শিকার হয়েও স্বপ্না হারুনকে ভালো পথে ফেরানোর জন্য আপ্রান চেষ্টা করে আসছিল। শেষ পর্যন্ত মারধর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অবশেষে ১৯/০৩/২১ তারিখে স্বপ্না হারুনকে তালাক প্রদান করে। হারুন এর সাবেক স্ত্রী স্বপ্না বলেন প্রায় ১৫ বছর তাদের বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে তাদের একটি ১১ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। হারুন ইয়াবা, ফেনসিডিল সহ বিভিন্ন নেশা দ্রব্য সেবন করত। তাকে সু-পথে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করেও  ব্যর্থ হয়েছি। শনিবার সে আমার পিতার বাড়ি এসে আমার মায়ের কাছে নেশার টাকা চায়। আমার মা বলে তোমার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমার মেয়ের সাথে তালাক হয়ে গেছে। তোমাকে টাকা দিব কেন? এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মাকে কুপিয়ে মারাত্নক যখম করে। এরপর আমার ভাই মা ও বাবাকে মারধর করে বাড়ির ধান নিয়ে চলে যায়। আমি আমার গরু ছাগল বিক্রি করে বসবাসের জমি ক্রয় করার জন্য হারুন এর ভাই ইউনুছুরকে ২ লাখ টাকা দেই। সেই টাকা হারুন নিজে নিবে বলে তার ভাইকে জমি দিতে নিশেধ করে। আমি আমার টাকা অথবা জমি ফিরে পেতে চাই।

মাছুরার ভাই আলাউদ্দিন বলেন, হারুন আমাকে হত্যা করার হুমকি দেয় । সে মাঝে মধ্যে আমাকে মারধর করে। তার অত্যাচারে আমরা গ্রামে বসবাস করতে পারছি না। হারুন এর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি আমার শশুর বাড়ির পরিবারের সদস্যদের মারতে গিয়েছিলাম। এসময় তার শাশুড়ী ঠেকাতে আসলে তার মাথায় আঘাত লাগে।

নাভারণ বুরুজবাগান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাছুরা বেগম বলেন, আমাকে সে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমার মাথায় ডাক্তার ১৬ টি শেলাই দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই। থানায় গিয়েছিলাম রক্তাক্ত অবস্থায়। থানার দারোগা বলেছে আগে চিকিৎসা নেন পরে মামলা নেওয়া হবে।

নাভারন হাসপাতালের ডাক্তার ইউসুফ আলী বলেন, মাছুরার মাথায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে । তবে সে শঙ্কা মুক্ত।
বেনাপোল পোর্ট থানার এ এস আই মাছুম বিল্লাহ বলেন আমরা ওই নারীর ছবি তুলে রেখেছি। তার রক্তাক্ত অবস্থা দেখে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। হাসপাতাল থেকে আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)