নিহত মুনিয়ার বাবা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা: মা ব্যাংকার
নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর গুলশানের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়া নামে এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি মিরপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
মঙ্গলবার সকালে ঢামেকে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। এর আগে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশান-২ একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মুনিয়ার বড় বোন মামলা করেন। মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে মুনিয়ার বাড়ী কুমিল্লা মনোহরপুর সোনালী ব্যাংকের পেছনে সেতারা সদনে গিয়ে দেখা যায় সুনশান নীরবতা। বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান ও কাজী সেতারা বেগম দম্পতির তিন সন্তান। বড় ছেলে আশিকুর রহমান। মেজ মেয়ে নুসরাত জাহান ও ছোট মেয়ে মোসারাত জাহান মুনিয়া।
মুনিয়ার বড় ভাই আশিকুর রহমান জানান, তিনি একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। তাদের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান। মা সেতারা বেগম ছিলেন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, মেজ বোন নুসরাত গৃহিণী। থাকেন কুমিল্লায়। ছোট বোন মোসারাত জাহান কুমিল্লা মডার্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাঁচ বছর আগে ঢাকায় চলে যান। গত বছর এসএসসি পাস করেন। পরে ভর্তি হন মিরপুর ইস্পাহানী স্কুল অ্যান্ড কলেজে। টুকটাক মডেলিং ও অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে খুব ভালো ছবি আঁকতে পারত।
আশিকুর রহমান জানান, মুনিয়া গত পাঁচ বছর ধরে ঢাকায় থাকে। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে পৈত্রিক সম্পত্তি তিন ভাইবোনের মাঝে টানাপোড়েন হয়। এ সংক্রান্ত একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন।
আশিকুর রহমান সবুজ আরো জানান, গতকাল সোমবার ইফতারের সময় তার মেজ ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান ফোন করে জানান মুনিয়া আর বেঁচে নেই।
আশিকুর রহমান সবুজ সংবাদমাধ্যমকে জানান, তার বোন মুনিয়া কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। সে খুব আত্মপ্রত্যয়ী একটা মেয়ে। নিশ্চয় এটার পেছনে রহস্য আছে। কারণ ছোটবেলা থেকেই তাকে কোলে পিঠে করে বড় করেছেন তিনি।
মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে আশিকুর রহমান সবুজ দায়ীদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মুনিয়ার খালাতো ভাই ইকবাল হোসেন জানান, তারা লাশ নিয়ে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। কুমিল্লায় আনুষ্ঠানিকতা শেষে নগরীর টমসম ব্রিজ কবরস্থানে বাবা-মার পাশে মুনিয়ার লাশ সমাহিত করা হবে।