মুখের ভেতর যেসব সমস্যা দেখা দিলে করোনা টেস্ট জরুরি

করোনার নানা নতুন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। অনেক সময় এমন সব লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে যার সঙ্গে আমরা পরিচিত নই। তাই সাধারণ সমস্যা মনে করে হয়তো পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে আরও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। সেজন্য করোনাভাইরাসের নতুন উপসর্গগুলোও চিনে রাখা জরুরি, সেসব উপসর্গ দেখা দিলে করোনা টেস্ট করাতে হবে। যদি আক্রান্ত হন তবে সবার থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

শুরুর দিকে জ্বর, গলাব্যথা, শরীর ব্যথা, স্বাদ ও গন্ধ না পাওয়া ছিল করোনার লক্ষণ। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কানে শুনতে না পাওয়া, চোখ লাল হওয়ার মতো লক্ষণ। দেখা দিচ্ছে আরও অনেক অচেনা লক্ষণ। করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের থেকে যেগুলো একদমই আলাদা। এবার যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের অনেকেরই জিহ্বায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রথমদিকে তেমন কোনো সমস্যা মনে হয় না বলেই টেস্ট করানো হয় না। কিন্তু পরে দেখা যায় এটি করোনার সংক্রমণ। তাই সতর্ক হওয়া জরুরি।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের গবেষণায় প্রকাশিত সমীক্ষা বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রায় অর্ধেক রোগীর ক্ষেত্রেই মুখের ভেতরে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রথমে একে সাধারণ সমস্যা মনে করেই ভুলটি করেন। তাই সেসব লক্ষণ আপনার জানা থাকা চাই। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে করোনা টেস্ট করিয়ে নিতে হবে-

নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ

নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হলে অনেকে এটি সাধারণ সমস্যা মনে করেন। কিন্তু এই সাধারণ সমস্যাও হতে পারে করোনাভাইরাসের লক্ষণ। বারবার মুখ শুকিয়ে আসা বা আঠালো হয়ে যাওয়াও করোনার উপসর্গ হতে পারে। কখনো কখনো খাবার চিবিয়ে খেতে সমস্যা হতে পারে, এমনকী জিহ্বাও জড়িয়ে আসতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে এরকম সমস্যা দেখা দেয়।

কোভিড টাং

গবেষণা বলছে, করোনায় আক্রান্ত হলে রোগীর জিহ্বায় জ্বালা হতে পারে। কখনো কখনো ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে জিহ্বায় মোটা সাদা আস্তরণ দেখা দিচ্ছে। কারও কারও ক্ষেত্রে মুখের ভেতর সাদা ফুসকুড়ি দেখা দিচ্ছে। হতে পারে ইনফেকশনও। জিহ্বায় আলসারের ক্ষতও দেখা দিতে পারে। তবে এই উপসর্গকে এখনও করোনার লক্ষণ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করেনি কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাই। গবেষকরা বলছেন, এবার অন্তর্ভূক্ত করার সময় এসেছে। নতুন এই উপসর্গকে বলা হচ্ছে কোভিড টাং।

মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া

মুখের ভেতর বারবার শুকিয়ে যাওয়াও হতে পারে করোনার লক্ষণ। সেইসঙ্গে যুক্ত হতে পারে ঠোঁট ফাটা ও গলা শুকিয়ে আসা। এসব লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হোন। যত দ্রুত সম্ভব করোনার পরীক্ষা করান। মুখের ভেতরে লালা ক্ষরণের মাধ্যমে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়। তবে করোনায় আক্রান্ত হলে হারিয়ে যাচ্ছে সেই ক্ষমতা।

ঠোঁটে ঘা

এই মুহূর্তে, ঠোঁটে ঘা হলে মোটেও সাধারণ সমস্যা ভেবে উড়িয়ে দেবেন না। হতে পারে আপনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর অনেক রোগীর ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই মারাত্মক ভাইরাস মুখের ভেতরের মাসল ফাইবারগুলো আঘাত করে। ফলে মুখে ঘা তৈরি হয়।

জিহ্বার রং পরিবর্তন

করোনার দ্বিতীয় ঢেউেয়ে এই লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। সেটি হলো জিহ্বার রং বদলে যাওয়া। শরীরে কোনো অসুখ দেখা দিলে জিহ্বার রং বদলায়। করোনার ক্ষেত্রে তাই ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখ ও জিহ্বার যেকোনো পরিবর্তনই হতে পারে করোনার লক্ষণ। তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে এড়িয়ে না গিয়ে দ্রুত পরীক্ষা করিয়ে নিন। মেনে চলুন সব রকম সতর্কতা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)