কলারোয়ায় কপোতাক্ষ নদে হঠাৎ নোনা পানি: চাষীরা চরম ভোগান্তিতে
নিজস্ব প্রতিনিধি:
কলারোয়ার জয়নগর পার্শ্ববর্তী যশোরসহ অন্যান্য এলাকার সেচ কার্যে কপোতাক্ষ নদের পানির উপর নির্ভরশীল চাষীরা এখন চরম ভোগান্তিতে। কপোতাক্ষে নোনা পানির আসাকে কেন্দ্র করে এমন বিড়ম্বনা। চলতি মৌসুমের বোরো ধান চাষে নদের পানির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল এই এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী যশোর জেলার কৃষকেরা।
হঠাৎ নদীতে নোনা পানির আগমনে কৃষক পর্যায়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শতশত বিঘা ধান, পাট, পানের বরজসহ অন্যান্য ফসলের সেচের পানি হিসেবে কপোতাক্ষের পানির উপর নির্ভরশীল কৃষকদের এখন চরম দূরাবস্থা।
অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় এ এলাকার মানুষ টিউবয়েলসহ সেচ কার্যে ব্যবহৃত মোটর, সেলোমেশিনে পানি না ওঠায় চরম বিপাকে পড়েছেন। পানির অভাবে বোরো ধানের জমি ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে। ধান ফোঁলার মুখে এমন পানি সংকটে কৃষকের চরম লোকসান গুনতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন অনেকে। এমতাবস্থায় এক পশলা বৃষ্টিই হতে পারে কৃষকদের সব প্রতিকুল অবস্থার সমাধান।
অপরদিকে, পাট চাষী, পান চাষীদেরও একই অবস্থা। সেচের অভাবে পাটের চারা অঙ্কুরিত হতে পারছে না। অঙ্কুরিত চারা মারাও যাচ্ছে প্রখর রৌদ্রে। পান চাষীদের সেচের অভাবে পানের গাছ মারা যাচ্ছে। পান বড় হচ্ছে না। রোগ বালাইয়ের উপদ্রপ লক্ষ করা যাচ্ছে।
জয়নগরের ধান চাষী স্বরজিত দাস জানিয়েছেন, তিনি ৪/৫ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। নদে নোনা পানি এসে বোরো ধানসহ পাট, পানের বরজ, সবজির আবাদের সেচ কার্য চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ধানের ফলন বিঘাতে ২২/২৫ মণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শেষ পর্যায়ে সেচের পানির অভাবে ধানের রোগ বালাইয়ের উপদ্রপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ধানের চিটি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
তিনি আরও জানিয়েছেন, পানির অভাবকে কেন্দ্র করে কৃষদের চরম লোকসান গুনতে হতে পারে।
ধানদিয়ারর চাষী কার্ত্তিক মুখ্যার্জী জানিয়েছেন, তিনি ২-আড়াই বিঘা জমিতে তরকারি আবাদ করেছেন। নদে নোনা পানি আসায় সেচ দিতে পারছি না তরকারির জমিতে। যার কারণে চাষকৃত তরকারির আবাদে ভালো ফলন পাচ্ছি না। প্রচন্ড রৌদ্রের তাপে দুপুরে চারা নেতিয়ে পড়ছে|বৃষ্টি না হয়ে এমন অবস্থা চলতে থাকলে কৃষক পর্যায়ে চরম দুরাবস্থা বিরাজ করতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
জয়নগরের পান চাষী হারান ঘোষ জানিয়েছেন, পানের বরজে সেচের অভাবে মাটি ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে। নোনা পানি সেচের জন্য উপযোগি না হওয়ায় বরজে সেচ দিতে পারছি না। প্রচন্ড তাপদাহে, কাঁট ফাঁটা রৌদ্রে পান ছোট হয়ে যাচ্ছে, পানের গাছ মারা যাচ্ছে।