আশাশুনিতে সংখ্যালঘুর ঘের লুট প্রতিবাদে মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার:
আশাশুনি উপজেলার রাউতাড়ায় প্রকাশ্য দেবালোকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মাছের ঘেরে হামলা চালিয়ে ঘের মালিককে মারপিট, মৎস্য ঘেরে লুটপাট ও ভাংচুর ও নেট টাঙিয়ে ঘের দখলের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের ভয়ে এলাকার লোকজনের মধ্যে ত্রাসের সৃষ্টি ও দেশীয় অস্ত্র হাতে প্রকাশ্যে হুংকারে গ্রামবাসী আতংকিত হয়ে পড়ে। প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দিবাগত সকাল থেকে খাজরা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের রাউতাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত ঘের মালিক রাউতাড়া গ্রামের মৃত্যু নিত্যানন্দ মন্ডলের পুত্র পরিতোষ মন্ডল (৬১) ও তার স্ত্রী সন্ধ্যা রানী (৫২) উদ্ধার করে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এঘটনায় আশাশুনি থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
আহত ঘের মালিক পরিতোষ কুমার মন্ডল,ইউপি সদস্য ইব্রাহিম হোসেন,হরিদাস মন্ডল জানান, রাউতাড়া মৌজার বিএস খতিয়ান নং-২৯,৯২২,৫৩৬সহ অন্যান্য বিএস ১৫৫৫ দাগে ২.৩৩ শতক জমি ষাটোর্ধ বছরের উর্দ্ধকাল ডিএস ও এসএ খতিয়ান এবং সুদীর্ঘকালের স্বত্ত্ব দখল ভিত্তিতে মাঠ ডিপিও চুড়ান্তভাবে বিএস রেকর্ডীয় সম্পত্তি ৭ বিঘা মৎস্য ঘের ভোগদখল করে আসছি। সোমবার সকালে সামাদ ঢালী ও কওসার শাহ্রে নেতৃত্বে ছালাম ঢালী,কালাম ঢালী,কেরামত ঢালী,কালীদাসসহ ১০/১৫জন সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দেবালোকে স্বশস্ত্র অবস্থায় মৎস্য ঘেরে আক্রমন করে। এসময় ঘের মালিক পরিতোষ মন্ডল ও তার স্ত্রী সন্ধ্যা রানী বাধা দিলে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয় ও বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকি দেয় । মঙ্গলবার রাতভর ঘেরের আটন ঝেড়ে ও জাল দিয়ে ৬০হাজার টাকার মাছ লুট করে নেয় তারা।
এঘটনায় পরিতোষ কুমার মন্ডল বাদী হয়ে আশাশুনি থানায় সামাদ ঢালী ও কওসার শাহসহ ১৪জনের নাম উল্লেখ করে লিখিত এজাহার দায়ের করলেও পুলিশের কোন কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে সংখ্যালঘুর জমি উদ্ধারের দাবিতে বুধবার বিকালে কালকীর স্লুইজ গেট এলাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য ইব্রাহিম গাজী,হরিদাস মন্ডল,অনুপ মন্ডল,আব্দুল গনি,কাকুলী রানী,সোহাগ ঢালী প্রমূখ। বক্তরা অবিলম্বে দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
আশাশুনি উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক ও খাজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ এস এম শাহনেওয়াজ ডালিম জানান, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় পরিতোষ মন্ডলের সম্পত্তিতে জোর পূর্বক নেট টাঙিয়ে দখলের ঘটনা অত্যান্ত নিন্দনীয়। বিষয়টি আমি থানা প্রশাসনসহ এমপি মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষ করেছি এবং দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তরা একাধিক মামলার আসামী। শুধু পরিতোষ নয় আরও একাধিক ব্যক্তির মাছ লুটসহ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে হুমকী ধামকী ও মারপিট করাসহ নানাবিধ অপরাধ করে তারা ইউনিয়নের নিরিহ মানুষকে হয়রানি করছে। তিনি এলাকার মানুষের শান্তি ও নিশ্চিন্তে বসবাসের স্বার্থে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে খাজরা ইউনিয়ন বীট অফিসার এসআই মামুন হোসেন জানান,গতকাল ভুক্তভোগীরা থানায় এসে এজাহার দিয়ে গেছে। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।