আওয়ামী লীগ সরকারকে ফাঁসাতে বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম

নিউজ ডেস্ক:

৯ বছর আগে ঢাকার বনানী থেকে নিখোঁজ হন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। মূলত আওয়ামী লীগ সরকারকে ফাঁসাতে ইলিয়াস আলীকে ‘গুম’ করার নাটক সাজানো হয়। এরই মধ্যে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা সেই কথা স্বীকার করেছেন। দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই গুম করা হয় ইলিয়াস আলীকে। ইলিয়াস আলীর মতো আলোচিত নেতাকে গুম করে আওয়ামী লীগ সরকারকে দোষারোপ করলে দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হবে বলে ভেবেছিলেন তারেক। এ সুযোগে সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে তার সেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়।

সূত্রটি আরো জানায়, সিলেট বিএনপির রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। একপক্ষে ছিলেন বিএনপির সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও অন্যপক্ষে ছিলেন ইলিয়াস আলী। চারদলীয় জোট সরকারের ক্ষমতা শেষ হলে সিলেটের বিএনপিতে এম সাইফুর রহমান অনুসারীর নিয়ন্ত্রণ কমে যায়। এককভাবে সিলেট বিএনপিতে আধিপত্য বিস্তার করেন ইলিয়াস আলী। তার দাপটে মুখ খুলতে পারতেন না সাইফুর রহমানের অনুসারীরা।

ইলিয়াস আলী এক সময় ছাত্রদলের বড় ক্যাডার ছিলেন। সেই ইলিয়াস সিলেট বিএনপি একাই নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন। এতে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তার ওপর নাখোশ হন সাইফুর অনুসারীরা। ইলিয়াস আলী থাকলে সিলেট বিএনপিতে সাইফুরের অনুসারীদের কোনো প্রভাব থাকবে না- এ আশঙ্কায় তাকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়।

বিষয়টি জানতে পেরে তারেক রহমান এ নোংরা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। তার নির্দেশ বাস্তবায়ন করেন সিলেট বিএনপির রাজনীতিতে সাইফুর অনুসারী হিসেবে পরিচিতি এম নুরুল হক, শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ও বদরুজ্জামান সেলিম। ইলিয়াস আলীর গুমের পুরস্কারও পেয়েছেন তারা।

২০১৪ সালে সিলেট নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত কমিটিতে শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও বদরুজ্জামান সেলিমকে সদস্য সচিব করা হয়। এ কমিটি থেকে বাদ পড়েন ইলিয়াস অনুসারীরা।

ইলিয়াস আলীর অনুসারী সিলেট বিএনপি নেতা ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ইলিয়াস ভাইয়ের গুমের পেছনে দায়ী সাইফুর রহমানের অনুসারী এম নুরুল হক, শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ও বদরুজ্জামান সেলিম। আমরা ইলিয়াস আলীর গুমের পেছনে দায়ীদের শাস্তি চাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, তারেকের এ নির্দেশে কিছু নেতা প্রতিবাদ জানান। কিন্তু তারেক তাদের বলেন, ক্ষমতায় আসতে হলে এ রকম দুই একজনকে বিসর্জন দিতে হয়। ইলিয়াস আলী এমনিতে বড় ক্যাডার। তাকে গুম করলে সহজেই সরকারকে দোষারোপ করা যাবে। এ গুমের জন্য সরকারকে দায়ী করে বিদেশে ভালো সমর্থন পাওয়া যাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তারেক রহমান কিছুটা বেয়াদব জানতাম কিন্তু এত বোকা তা জানতাম না। ইলিয়াস আলীর মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে গুমের নির্দেশ দেন কীভাবে? অবশ্য আগেও তারেক বোকামি করেছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা করে বিএনপির পতন ডেকে এনেছিলেন তারেক। এখন মির্জা আব্বাস ইলিয়াস আলীর ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। বিএনপির মধ্যে কারা তাকে গুম করেছে তাদের তিনি চেনেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)