কালিগঞ্জের জগবাড়ীয়া খাল ভুমিদস্যুদের কবল থেকে উন্মুক্তের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কালিগঞ্জের জেলে পরিবারের সদস্যরা ভুমিদস্যুদের কবল হতে সরকারী জলমহল উন্মুক্তের দাবীতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় লিখিত বক্তব্য রাখেন কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন জেলে সমিতির সভাপতি শ্রী কুমার মন্ডল। তিনি বলেন কালিগঞ্জের অতি জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারী জলমহল বিএনপি নেতা ভুমিদস্যু আজিজ শেখসহ তার দোসররা দীর্ঘদিন ভূয়া কাগজপত্রের বলে জবরদখল করে আসছে। বৃহৎ জনগোষ্ঠির সুবিধা বঞ্চিত করে কতিপয় ভুমিদস্যু ও ভুমি সন্ত্রাসী প্রশাসনের নাকেরডগায় খালের মাঝখানে বাঁধদিয়ে মাছচাষ করে ব্যাক্তি স্বার্থ হাছিল করছে। খালটি উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ভেগেরহাট খোলা থেকে বামনহাট পযর্ন্ত ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তীর্ণ। ঐতিহ্যবাহী জগবাড়ীয়া খালটি নামে-বেনামে দখল করে এর রূপ ও নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে পরিকল্পিত ভাবে। আর এভাবেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখের সামনেই ধীরে ধীরে দখল হয়ে যাচ্ছে জনগুরুত্বপুর্ণ সরকারি খালগুলো। যেন বলার কিছু নেই, দেখারও কেউ নেই। যে যার মতো দখল করে নিয়েছে জনগুরুত্বপুর্ণ সরকারি সম্পত্তি। তবে এর সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারাও জড়িত রয়েছে বলে আমরা মনে করি। খালটি দীর্ঘদিন যাবৎ উন্মুক্ত ছিল বর্তমানে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীরা খালটি নিজেদের জায়গা দাবী করে দখল করে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৪০ বিঘা জমি দখলে নিয়েছে উল্লেখিত ভুমিদস্যরা। এসব প্রভাবশালীদের খাল দখলের কারণে জগবাড়ীয়া খালটি বিলীন হতে বসেছে।
স্থানীয় গ্রামবাসী রমেশ মন্ডল, সন্ন্যাসি মন্ডল, তরু মন্ডল, ভারতী মন্ডল সহ একাধিক ব্যক্তির পূর্ব পুরুষ থেকে আমরা এই খালটিতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম। নতুন করে এই খালটির প্রায় ৬ বিঘার এরিয়া জুড়ে খালের মাঝখান হতে খুঁটি পুঁতে বেড়া দিয়ে দখল করা শুরু করেছে ঐ এলাকার বানিয়াপাড়া গ্রামের ভুমিদস্যু সব্বান আলী শেখের দুই ছেলে সাইদুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলাম। এছাড়াও ইতিপুর্বে পাশ্ববর্তী বানিয়াপাড়া খালের প্রায় ২৭ বিঘার এরিয়া জুড়ে ২০১৩ সাল থেকে দখল করে সেখানে মাছের প্রজেক্ট তৈরি করেছে কুখ্যাত সন্ত্রাসী, কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি,আলহাজ্ব আক্কাস আলী শেখ এর পুত্র ভুমিদস্যু আঃ আজিজ শেখ ও বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নুর ইসলাম শেখ। তাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতন, সরকারী সম্পত্তি জবরদখল, সহিংসতা সৃষ্টিকরা, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ও আইন অমান্যকরাসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ রয়েছে। ভুমিদস্যু এই আজিজ শেখ কোন মৎস্যজীবি সমিতির সদস্য কিংবা ব্যক্তি নন তাহলে তিনি এটি কিভাবে ইজারা নিলেন সেটাই এখন প্রশ্ন আমাদেরসহ এলাকাবাসীর। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা জালাল উদ্দীনের সহযোগিতায় হীনস্বার্থ চরিতার্থ করে আসছে আজিজ ও তার সহোদর ধুরন্ধর নুর ইসলাম। তাদের বিরুদ্ধে সহজে কেহ মুখ খুলতে চায়না, তাদের আছে পেটুয়া বাহিনী ও সন্ত্রাসী বাহিনী। ইতিপূর্বে খাল দখলের খবরটি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ায় আমাদের নানান হুমকী ধমকি দিচ্ছে আজিজ বাহিনী। বাঁধা প্রদানের পরেও তারা বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে আমরা গনমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর কন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সাতক্ষীরার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমরা চাই জাল যার জলা তার। ভুমিদস্যুদের হাত হতে সরকারী খাস সম্পত্তি দখলমুক্ত হোক। আমার পুর্ব পুরুষরা যেভাবে জগবাড়িয়া খালে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেছে, আমরাও চাই ঐ খালে উন্মুক্ত অবস্থায় মাছ ধরে সংসার নির্বাহ করতে। পরিশেষে আবারও দাবী করছি যাহাতে ভুমি দস্যুদের কবল হতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দ্রুত খালটি উদ্ধার করে জনগনের জন্য উন্মুক্ত করে হয়। আমার সাথে সংবাদ সম্মেলনকালে উপস্থিত আছেন জেলে সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।