হাতাকাটা ব্লাউজ নিয়ে ট্রল: যা বললেন ভাবনা
বিনোদন ডেস্ক:
অভিনয়ের পাশাপাশি লেখক হিসেবেও অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা পাঠক মহলে জায়গা করে নিয়েছেন। এবারের একুশে গ্রন্থমেলায় দুটি বই এসেছে তার। এই গ্ল্যামার কন্যার বই দুটির একটি হলো উপন্যাস ‘গোলাপী জমিন’ আর অন্যটি কবিতার বই ‘রাস্তার ধারে গাছটির কোনো ধর্ম ছিল না’। বরাবরই অভিনেত্রী বইমেলায় উপস্থিত থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বইমেলায় তিনি উপস্থিত হন। শাড়ি ও স্লিভলেস ব্লাউজ পরে মেলায় আসেন ভাবনা। ভক্তদের অটোগ্রাফ দেন ও ছবি তোলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন কয়েকটি ছবি বেশ ভাইরাল হয়। ছবিগুলো বইমেলায় কোনো একজন তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। সেগুলো নিয়ে ট্রলও হচ্ছে। ভাইরাল হওয়া এই ছবিগুলো নজরে এসেছে এই অভিনেত্রীরও। তবে এবার চুপ থাকলেন না ভাবনা। এ নিয়ে মুখ খুললেন। সেইসঙ্গে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিবাদও জানালেন তিনি।
আমার দোষ আমি হাটাকাটা ব্লাউজ পরে বইমেলায় গিয়েছি ??? সত্যি !!!! আমাদের নানী দাদীরা এখনও হাটাকাটা ব্লাউজ পরে থাকেন । এই…
প্রথম পোস্টে ভাবনা লিখেছেন, ‘আমার দোষ আমি হাতাকাটা ব্লাউজ পরে বইমেলায় গিয়েছি? সত্যি! আমাদের নানী দাদীরা এখনও হাতাকাটা ব্লাউজ পরে থাকেন। এই ছবিটি সবাই পোষ্ট করছে, আমাকে নিয়ে বাজে কথা লিখছে। অশ্লীল বলছে! যারা পেস্ট করে বাজে লিখছে তারা বেশিরভাগ পুরুষ। সব পুরুষকে খারাপ বলব কি করে? আমার বাবা তো আমাকে কখনো বলে দেয় নি কি পোশাক পরা উচিত? আমি কি পরব? আমরা নারীরা কি পরব তা ঠিক করবেন আপনি? আমার সত্যি কিছু বলার নেই। গত তিন চার দিন ধরে আমি বিরক্ত খুবই এবং হতাশ। আমরা আসলেই কি নারীর সম্মান কখনই দিতে পারব না!’
বিষয়টি নিয়ে অন্য একটি পোস্টে ভাবনা লিখেছেন, ‘২০২১ সালে স্লিভলেস ব্লাউজ নিয়ে কথা বলতে হয়, এটা নিয়ে আমাকে হেয় করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই। ষাটের দশকে, সত্তর দশকেও স্লিভলেস ব্লাউজ পড়তো আমাদের দাদি-নানীরা। তখনও এটা স্বাভাবিক ছিল। এখনও তাই আছে বলে আমি বিশ্বাস করি। অথচ এই সময়ে এসে স্লিভলেস ব্লাউজের কারণে কথা হচ্ছে-এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? আমি কেবল তাদের কথা ভাবি, যারা প্রতিদিন বাসে যায়, যারা প্রতিদিন পার্লারে কাজ করে রিক্সা করে বা হেটে বাড়ি ফেরে। প্রতিমুহূর্তে আমাদের সচেতন থাকতে হবে, কাপড় ঠিক করতে হবে? কতটা জঘন্য এদের মানসিকতা! এরাই ধর্ষক।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি এসব নিয়ে পাত্তা দেই না। কারণ আমার সময় নেই। আমি অভিনয় করি, আমাকে টেলিভিশনে দেখা যায়, তাই আমাকে নিয়ে যে কেউ যা খুশি তাই বলার অধিকার রাখে। আমি এসব পাত্তা দেবো না এটাই সদা সত্য। তবে আমি তাদের নিয়ে ভাবি- কত মেয়েকে সাইবার বুলির শিকার হতে হয় প্রতিনিয়ত। আমার কাপড় নিয়ে কথা বলার তুই কে? আমাদের সরকার-আমাদের পুলিশ যদি একটু সহায়তা করতো তাহলে এইসব অপরাধ হয়তো অনেকটা কমে যেতে পারতো। সাইবার ক্রাইমের তত্ত্বাবধানে যদি ১০ জন এরকম অপরাধীকে ধরে শাস্তি দেওয়া যেত তাহলে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হতে পারতো। এই দৃষ্টান্ত এইসব অপরাধ অনেক কমিয়ে দিতে পারতো।”