রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করার শক্তি দেয় পেয়ারা

চিকিৎসা ডেস্ক :

পেয়ারা খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি ফল। যা দেশি ফল হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। প্রায় ১২ মাসই এই ফলটি পাওয়া যায়। ফলটি দানে সস্তা এবং সহজলভ্যও। তাইতো এর চাহিদাও অনেক। পেয়ারা ভর্তা কিংবা জেলী তৈরি করে খাওয়া যায়। অনেকেই আবার মজাদার এই ফলটি দিয়ে তরকারিও রান্না করে খেয়ে থাকেন।

জানেন কি, শুধু ফল নয়, পেয়ারা পাতায়ও রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। বহুগুনী এই পেয়ারার স্বাস্থ্যগুণ নিয়ে আজকের এই ফিচার। চলুন তবে পেয়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক-

পেয়ারার পুষ্টিগুণ

পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ। একটি পেয়ারাতে ৪ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে একটি মাঝারি আকৃতির কমলা থেকে। ১০ গুণ বেশি ভিটামিন এ রয়েছে লেবুর তুলনায়। এছাড়া ভিটামিন বি২, ই, কে, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, কপার, আয়রন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম রয়েছে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে।

ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা দূর করে

বিভিন্ন ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা যেমন ব্রংকাইটিস সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখে পেয়ারা। উচ্চ পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি থাকায় এটি শ্লেষ্মা কমিয়ে দেয়। তবে কাঁচা পেয়ারা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা দূর করতে কার্যকর।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

পেয়ারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে

ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পেয়ারা রাখুন। কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ এর ভালো উৎস।

মাসিকের ব্যথা নিরাময়

অনেক নারীরই মাসিককালিন পেটব্যথা হয়। এ সময় অনেকেই ব্যথার ওষুধ খেয়ে থাকেন। কিন্তু এ সময় পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা এর রস খেলে মাসিককালিন ব্যথা থেকে অধিকতর দ্রুত উপসম পাওয়া যায়।

ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস

পেয়ারাতে লাইকোপিন, ভিটামিন সি, কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। এটি প্রোসটেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

হার্ট সুস্থ রাখতে

১৯৯৩ সালে জার্নাল অব হিউম্যান হাইপারটেনশন এ প্রকাশিত হয় যে, নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্ত চাপ ও রক্তের লিপিড কমে। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম, ভিটামিন সি রয়েছে। পটাশিয়াম নিয়মিত হৃদস্পন্দনের এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা খেলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে

চাইনিজ চিকিৎসা শাস্ত্রে অনেক বছর ধরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পেয়ারা ব্যবহার হয়ে আসছে। ১৯৮৩ সালে আমেরিকান জার্নাল অব চাইনিজ মেডিসিন প্রকাশ করেন যে, পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পেয়ারা পাতাও বেশ কার্যকর।

এক্ষেত্রে কচি পেয়ারা পাতা শুকিয়ে মিহি গুঁড়া করে নিন। এবার ১ কাপ গরম পানিতে ১ চা চামচ দিয়ে ৫ মিনিট ঢেকে রাখুন। তারপর ছেঁকে নিয়ে পান করন। এটি প্রতিদিন পান করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)