দেবহাটার নওয়াপাড়া আলিম মাদরাসায় গোপনে নিয়োগের চেষ্টা, ৫টি লিখিত অভিযোগ দায়ের
দেবহাটা প্রতিনিধি:
দেবহাটার নওয়াপাড়া সিদ্দিকিয়া আলিম মাদরাসায় বিভিন্ন পদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার তথ্য জনসম্মুখে না এনে মাদরাসাটির অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক গোপনে নিয়োগ বানিজ্যের চেষ্টা করার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পৃথক পাঁচটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।
রবিবার সকালে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তারের কার্যালয়ে মাদরাসাটির অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির প্ররোচনার শিকার হয়ে আবেদনে ব্যার্থদের মধ্যে নির্ধারিত ছয়টি পদের বিপরীতে ৫জন পৃথক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীরা তাদের লিখিত অভিযোগে বলেছেন, সরকারি বিধি মোতাবেক এমপিও নীতিমালার আলোকে ২০১৮ সাল হতে ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত সংশোধিত উপজেলার নওয়াপাড়া সিদ্দিকিয়া আলিম মাদরাসার ১) উপাধ্যক্ষ, ২) সহকারি গ্রন্থাগার কাম ক্যাটালগার, ৩) অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ৪) অফিস সহায়ক, ৫) নিরাপত্তাকর্মী, ৬) আয়া পদের অবশিষ্ট পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নের নির্দেশনা রয়েছে।
অথচ, মাদরাসাটির অধ্যক্ষ মাওলানা আবু সাঈদ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহমুদুল হক লাভলু মোটা অংকের অর্থের লালসায় পদে নির্ধারিত প্রত্যেকটি পদে একটি করে আবেদন নিয়ে গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। আবেদনের সময়সীমা ও গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াকে গোপন করতে তারা গত ৩ মার্চ তারিখে নামসর্বস্ব সাতক্ষীরার একটি দৈনিক পত্রিকা ও একটি জাতীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত ওই পত্রিকা দুটির মধ্যে জাতীয় দৈনিকটির দীর্ঘদিন দেবহাটা উপজেলাতে সরবরাহ নেই এবং সাতক্ষীরার স্থানীয় পত্রিকাটি সারা উপজেলাতে মাত্র ১০ কপি সরবরাহ থাকার বিজ্ঞপ্তিটি সর্বসাধারণের দৃষ্টিগোচর হয়নি।
অভিযোগে আরোও বলা হয়েছে, মাদরাসাটির অধ্যক্ষ আবু সাঈদের বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতা মামলা রয়েছে। এছাড়া মাদরাসাটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহমুদুল হক লাভলু আগামী ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী। জামায়ত অধ্যুষিত এলাকায় ভোটের আশায় এবং নির্বাচনী খরচ যোগাতে গোপনে মোটা অংকের অর্থের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে ছয়টি পদে ছয়জন জামায়ত-শিবির কর্মীকে নিয়োগ দিতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। শুধু আবেদন প্রার্থীরা নয়, মাদরাসা কর্তৃপক্ষের পাতানো নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত নন সেখানকার ইউপি সদস্য মজিবর রহমান, মনিরুজ্জামান মনি এমনকি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দরাও। সেজন্য লিখিত অভিযোগে নির্বাহী অফিসারের কাছে পুনরায় স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু সাঈদ বলেন, মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তেই ওই দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহমুদুল হক লাভলু বলেন, আমি নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকায় নিয়োগ প্রক্রিয়া ঠিকঠাক দেখাশুনা করতে পারছিনা।
এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তার বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি যাতে করে স্বচ্ছভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।