সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কুড়িয়ে পাওয়া শিশুটি দত্তক পেলেন আঞ্জুয়ারা
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
একজন নি:সন্তান নারীই বোঝে সন্তান না হওয়ার কি যন্ত্রনা। আর শুধুমাত্র সে কারনেই নিজে নি:সন্তান নারী হয়ে আদালতের আদেশ পাওয়ার পরও অপর একজন নি:সন্তান নারীর কোল থেকে নিতে পারলেননা সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কার্লভার্টের উপর পরিত্যক্ত ব্যাগে কুড়িয়ে পাওয়া সেই শিশুটিকে। এমন মহানুভবতার পরিচয় দিলেন, ঢাকার ফারজানা। তিনি আদালতের আদেশে শিশুটিকে দত্তক হিসেবে পেয়েও ফিরিয়ে দিলেন কুড়িয়ে পাওয়ার দিন থেকেই অবুঝ শিশুটি এই নিষ্ঠুর পৃথিবিতে যার বুকে মাথা গোজার ঠাই পেয়েছে সেই নি:সন্তান আনঞ্জুয়ারার কাছে।
ফারজানার লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরার শিশু আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান মঙ্গলবার ফের আদেশ দিলেন আঞ্জুয়ারা নামের ওই নারীকে শিশুটি দত্তক দেওয়ার জন্য।
এর আগে গত ১৮ মার্চ বিচারকের এক আদেশে ঢাকার উত্তর যাত্রাবাড়ী এক নম্বর গেট, বিবির বাগিচার বাসিন্দা বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের নি:সন্তান স্ত্রী ফারজানা বেগমকে শিশুটি দত্তক হিসেবে দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য: সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কাচড়াহাটি নন্দিগ্রামের নি:সন্তান আঞ্জুয়ারা খাতুনের স্বামী মসজিদের মুয়াজ্জিন সামছুর রহমান ফজরের নামাজের আযান দেওয়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার সময় গত ২ মার্চ ওই শিশু পুত্রটিকে দেখতে পান। এরপর
থেকে অদ্যবধি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার নি:সন্তান স্ত্রী আঞ্জুয়ারারকাছে রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন। কিন্তু আদালতের আদেশ পেয়ে ঢাকার ফারজানা আনন্দে আত্মহারা হয়ে শিশু পুত্রটির জন্য ব্যাগ ভর্তি নতুন জামা-কাপড় কিনে
ব্যবসায়ী স্বামীকে নিয়ে গেলেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে । দেখলেন নি:সন্তান স্ত্রী আঞ্জুয়ারার বুকে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে শিশু পুত্রটি।
আঞ্জুয়ারা খাতুন ফারজানাকে দেখে এবং তাকেই শিশু পুত্রটিকে দত্তক দেওয়া হয়েছে শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং ফারজানার দু’হাত জড়িয়ে ধরে সন্তানটি ভিক্ষা চান। ফারজানা সকল ঘটনা শুনে সিদ্ধান্ত নেন শিশুটিকে আঞ্জুয়ারার কোলেই
ফিরিয়ে দিতে। আর সে কারনেই আদালতে আবেদন করে সামগ্রীক বিষয়টি উপস্থাপন করেন। বিচারক শেখ মফিজুর রহমান শিশু পুত্রটির সার্বিক মঙ্গলার্থে পুনরায় আঞ্জুয়ারাকে দত্তক দেওয়ার আদেশ দেন।