পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর দেশটির ফার্স্ট লেডি হিসেবে পরিচিত তার স্ত্রী বুশরা বিবিও আক্রান্ত হয়েছেন এই রোগে। ইমরান খানের পররাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষ সহকারী জুলফিকার বুখারি এক টুইটবার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
টুইটবার্তায় বুখারি বলেন, ‘আমাদের ফার্স্ট লেডি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ফার্স্ট লেডির দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আল্লাহ তাদের আরোগ্য দান করুন।’
পরে পাকিস্তান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য ফয়সার জাভেদ দেশটির পত্রিকা ডনকে এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। এক প্রতিবেদনে ডন জানিয়েছে, একই দিন আক্রান্ত হয়েছেন ইমরান খান ও বুশরা বিবি।
গত বৃহস্পতিবার করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন ইমরান খান। তার দুদিন পরই শনিবার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে টু্ইটার, ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টের বন্যা বয়ে যায়। দেশটির রাজনীতিবিদ, বিভিন্ন অঙ্গনের তারকা ও নাগরিকরা প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন। ইতোমধ্যে দেশটিতে টুইটার হ্যাশট্যাগে ইমরান খঅন ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।
টিকা নেওয়ার মাত্র দুদিনের মাথায় ইমরান খান করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। তবে পাকিস্তানের শিল্পমন্ত্রী হামাদ আজহার এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের জ্যেষ্ঠ নেতা ড. শাহবাজ গিল তাদের টুইটবার্তায় নিশ্চিত করেছেন, টিকা নেওয়ার সঙ্গে করোনায় আক্রান্তের সম্ভাবনা নেই।
দক্ষিণ এশিয়ায় করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে বেশ পর্যুদস্ত অবস্থায় রয়েছে পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার ২২ কোটি মানুষের এই দেশটিতে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ৩ হাজার ৮৭৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন; যা গত জুলাইয়ের পর একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ।
মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬ লাখ ২৩ হাজার ১৩৫ জন এবং এখন পর্যন্ত এ রোগে সেখানে মারা গেছেন ১৩ হাজার ৭৯৯ জগন। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত করোনা ওয়ার্ল্ডোমিটারে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান ৩১ নাম্বারে আছে।
চীনের কাছে থেকে পাওয়া অনুদানের টিকার ডোজ সম্বল করে গত ১০ মার্চ থেকে সাধারণ নাগরিকদের প্রয়োগ শুরু করেছে পাকিস্তান। বয়োজ্যেষ্ঠদের এই টিকা দেওয়া হলেও গত মাসের শুরুর দিকে দেশটির স্বাস্থ্য কর্মীরা তা নেওয়া শুরু করেন। তবে চীনের টিকা নিয়ে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে উদ্বেগ রয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি সিনোফার্ম এবং ব্রিটেনের অ্যাস্ট্রাজেনেকা ছাড়া রাশিয়ার স্পুটনিক এবং চীনের ক্যানসিনো বায়োলজিকসের তৈরি দু’টি করোনা টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও দেশটি এখন পর্যন্ত কোনও ওষুধপ্রস্তুতকারকের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কেনার চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি। বিশ্বের দারিদ্র দেশগুলোতে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেওয়া উদ্যোগ গ্যাভি-কোভ্যাক্সের ওপর নির্ভর করছে ইসলামাবাদ।
এই উদ্যোগের প্রথম দফার অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ২৮ লাখ ডোজের চালান চলতি মাসেই পাকিস্তানে পৌঁছাতে পারে বলে প্রত্যাশা করছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
সূত্র: ডন