মিয়ানমার: বিক্ষোভকারীদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গুলি চালানোর নির্দেশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
‘মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গুলি করো’ মিয়ানমারে বিক্ষোভ দমনে জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে এমনই নির্দেশ দেয়া হচ্ছে পুলিশকে। সম্প্রতি মিয়ানমারের সামরিক সরকারের নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ভারতে পালিয়ে আসা পুলিশ সদস্য মঙ্গলবার রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন।
বিতর্কিতভাবে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দেশটির শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে চলা বিক্ষোভে সরাসরি গুলি চালিয়ে বহু লোককে হত্যা করেছে পুলিশ। সামরিক সরকারের নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ শতাধিক লোক ভারতে পালিয়ে এসেছেন।
পালিয়ে আসা পুলিশ সদস্য থা পেঙ জানান, তাকে তার সাব-মেশিনগান দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে বলা হয়। মিয়ানমারের শহর খামপাতে তার ডিউটি ছিল। তবে অফিসারের আদেশ তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। পরদিন আরেক অফিসার তাকে গুলি করার কথা বলেন। সে সময়ও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে লুকিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণ করে ভারতে পালিয়ে আসেন। তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মিজোরাম রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন।
এ বিষয়ে তার কোনো বিকল্প উপায় ছিল না বলে সাক্ষাৎকারে জানান থা পেঙ। একজন অনুবাদকের সহায়তায় তিনি রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন। তিনি নিজের নিরাপত্তার জন্য পুরো নাম জানাননি। তবে রয়টার্স তার পুলিশের পরিচয়পত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখেছে।
থা পেঙ জানান, তিনি এবং তার ছয় সহকর্মীর সকলেই অফিসারদের আদেশ অমান্য করেছিলেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি তাদের নাম প্রকাশ করেননি।
ভারতে পালিয়ে আসা আরো এক পুলিশ অফিসার এবং তিন কনস্টেবল মিজোরাম পুলিশকে দেওয়া বিবরণীতে একই কথা জানিয়েছেন। রয়টার্স তাদের সেই নথি দেখেছে।
ওই চারজন মিজোরাম পুলিশকে দেয়া যৌথ বিবরণীতে বলেছেন, বিভিন্ন স্থানে অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভ দমনের জন্য বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের নিজেদের লোক- যারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছে- তাদেরকে গুলি করার সাহস আমাদের নেই।
পালিয়ে আসা পুলিশদের এমন অভিযোগের বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মতামত নেয়ার চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে তারা এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বিক্ষোভ দমাতে এবং জাতীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পুলিশ অত্যন্ত সংযমের সঙ্গে কাজ করছে বলে এর আগে দাবি করেছিল মিয়ানমারের সামরিক জান্তা।