কলারোয়ায় অবশেষে তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধিত্বকারী অদম্য দিথী খাতুনের জয়লাভ
কামরুল হাসানঃ
কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী তৃতীয় লিঙ্গের দিথী খাতুনের নিয়ে ভোটারদের এক ভিন্নমাত্রার উৎসাহ-উদ্দীপনা ও কৌতূহল দেখা দিয়েছিলো।
অবশেষে সেই দিথী খাতুন এবারের নির্বাচনে কলারোয়া পৌরসভার ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হিসেবে জয়লাভ করলেন। গণমাধ্যমের কল্যাণে কাউন্সিলর প্রার্থী
দিথী সবখানেই পরিচিত মুখ। আলোচিত প্রার্থীও বটে। সকলেই জেনে গেছেন এই প্রার্থীর নাম। নারী কাউন্সিলর প্রার্থী তৃতীয় লিঙ্গের দিথী খাতুনের নির্বাচনী প্রতীক ‘আংটি’। তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের
প্রতিনিধিত্বকারী এই প্রার্থী এ নির্বাচনে কেমন করবেন-তা নিয়ে এবারও মানুষের ছিলো ভীষণ আগ্রহ। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে দিথী খাতুন সর্বপ্রথম চুড়ি প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হন।
সেই নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পান। এবারও অদম্য দিথী খাতুন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন আংটি প্রতীক নিয়ে। আর দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় শেষ হাসিটি তিনিই হাসলেন। এই সংরক্ষিত আসনে তাঁর প্রতিদ্ব›দ্বী অন্য প্রার্থীরা ছিলেন: আনারস প্রতীকে মোছা: শাহানাজ খাতুন, চশমা প্রতীকে রূপা খাতুন, জবাফুল প্রতীকে হাসিনা আক্তার ও টেলিফোন প্রতীকে জাহানারা খাতুন। দিথী খাতুনের আশা ছিলো, তিনি এবার নির্বাচনী বৈতরণী পেরিয়ে যাবেন। তাঁর বিশ্বাস, জনপ্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে সমাজের মূল ধারায় চলে আসা। মানুষ হিসেবে
মানুষের পাশে থেকে সেবা করা। সমাজের মূল ধারার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তারাও সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখতে প্রতিশ্রæতিশীল। জানা গেছে, তাঁর
পৈত্রিক নিবাস ছিলো যশোর সিটি কলেজ এলাকায়।
বাবার নাম আব্দুল হামিদ মিয়া। তাঁরা ৩ ভাই ও ১ বোন। ভাই ৩ জনের কোনো সমস্যা নেই। কেবলমাত্র তাঁর পরিবারে তিনিই বিশেষ সম্প্রদায়ের। অন্যরা সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। তিনি একটু বড় হওয়ার পরে পরিবার ছেড়ে চলে আসেন ও
মিশে যান তাঁর গোত্রীয় অন্যদের সাথে। এভাবে চলতে থাকে পথ পরিক্রমা।
অবশেষে তিনি থিতু হন কলারোয়া পৌরসভার মির্জাপুরে। এখানে জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে শুরু করেন বসবাস। নিজ গোত্রীয় মানুষের সাথে মিলে
চলতে থাকেন। এলাকায় সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়েই শুরু করেন সামাজিক জীবন।