দেশের নানা আয়োজনে ১৭-২৬ মার্চ যোগ দেবেন বিশ্ব নেতারা

নিউজ ডেস্ক:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের নিয়ে এক বড় উৎসব পালনের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ।

বিদায়ী বছরে সরকার বেশ কিছু বড় কর্মসূচির পরিকল্পনা করলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সব বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা ১৭ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে কয়েকজন সরকারপ্রধানের আগমন আশা করছি। এরই মধ্যে কিছু নিশ্চয়তাও পেয়েছি, তবে এটি নির্ভর করছে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতির ওপর।

তিনি জানান, মার্চের নির্ধারিত ওই ১০ দিনের মধ্যে যারা বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ, নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং।

তবে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে সরকার কোনো কর্মসূচি করতে চায় না বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিশ্ব শান্তি সম্মেলন

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ আগামী বছর বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি উপযুক্ত তারিখ খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছি এবং এটি হবে বিশ্বের সব শান্তিপ্রেমীর সমাবেশ।

ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু তার পুরো জীবন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বৈষম্য দূরীকরণ ও জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য কাটিয়েছেন এবং তিনি গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু সারা জীবন শান্তি ও স্থিতিশীলতা চেয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমরা বিশিষ্ট কবি, ঔপন্যাসিক, গায়ক ও বুদ্ধিজীবীদের একটি দীর্ঘ তালিকা তৈরি করছি। পরে আমরা এটি ছোট করব।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) বাংলাদেশের সঙ্গে একসাথে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে উদযাপনের সময়সীমা এরই মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বের ভুল ধারণা পুরোপুরি পরিবর্তন করতে চায় সরকার এবং বাংলাদেশ যে সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দেশ সেটিও বিশ্বকে জানাতে চায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অনেক সময় দারিদ্র্যপীড়িত এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আমাদের দেশকে নিয়ে বিশ্বের এসব ধারণায় পুরোপুরি পরিবর্তন আনতে চায় সরকার। বাংলাদেশকে ইতিবাচকভাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য বিদেশে ৭৮ মিশনের মাধ্যমে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই ৭৮ মিশনের মধ্যে ৬৮ মিশনে বঙ্গবন্ধু কেন্দ্র চালু করেছে সরকার।

তিনি বলেন, থাইল্যান্ড ও জার্মানিতে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু কেন্দ্র চালু করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া মরিশাস বঙ্গবন্ধুর নামে তাদের একটি রাস্তার নামকরণ করেছে।

এদিকে, ১৯৭২-৭৪ পর্যন্ত জাতির পিতার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত সুগন্ধায় স্থাপিত ‘জেনোসাইড কর্নার’ ছাড়াও সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় উদ্বোধন করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু গ্যালারি ও গ্রন্থাগার’। এছাড়া, বঙ্গবন্ধু সেন্টার ফর ডিপ্লোমেটিক স্ট্রাটেজি অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

কর্মকর্তারা বলছেন, বিদায়ী ২০২০ সালে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো ‘সৃজনশীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার’ প্রবর্তন করা।

ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের ২১০তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

পুরস্কারটি সৃজনশীল অর্থনীতিতে যুব সমাজকে যুক্ত করার ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেবে। প্রতি দুই বছর অন্তর এ পুরস্কার প্রদান করা হবে যার অর্থমান ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)