ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণ: ভিপি নুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ৭ জানুয়ারি
নিউজ ডেস্ক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসির আদালত আগামী ৭ জানুয়ারি ধার্য করেছেন।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় নতুন এদিন ঠিক করেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার মামলার এজাহার গ্রহণ করে কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) নুর আলমকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের এ নির্দেশ দেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর লালবাগ থানায় করা ধর্ষণ মামলার বাদীই গত ২১ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় নতুন করে এ মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলার ভিপি নূর বাদে অপর আসামিরা হলেন- বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ, একই সংগঠনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হুদা এবং ঢাবি শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকি।
এদিকে ওই শিক্ষার্থীর ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতার মামলায় গত ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হুদাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গত ১২ অক্টোবর তাদের প্রত্যেককে দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এরপর গত ৪ নভেম্বর বংশাল থানার রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে ছাত্র অধিকার পরিষদের নাজমুল হাসান সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে লালবাগ থানার অপর একটি মামলায় গত ৩ ডিসেম্বর এই গ্রেফতার তিনজনকে দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর রিমান্ড শেষে গত ৭ ডিসেম্বর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে এই তিন আসামি কারাগারে রয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের সঙ্গে বাদীনির পরিচয় হয় এবং তার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে আসামি হাসান আল মামুন বাদীনিকে শারীরিক সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। ফলশ্রুতিতে গত ৩ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে বাদীনিকে লালবাগের নিজ বাসায় যেতে বলেন আসামি হাসান আল মামুন। সেখানে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
এরপরের পরের দিন বাদীনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ১২ জানুয়ারি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসামি নাজমুল হাসান সোহাগের মাধ্যমে ভর্তি হন। এরপর আসামি হাসান আল মামুন আত্মগোপন করেন। আসামি নাজমুল হাসান সোহাগ গত ৯ ফেব্রুয়ারি আসামি হাসান আল মামুনের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেয়ার কথা বলেন।
পরে এদিন সকালেই আসামি নাজমুল হাসান বাদীনিকে সঙ্গে নিয়ে কোতোয়ালি থানার ৫৬৩/৫৬৬ মিউনিসিপাল হকার্স মার্কেট সদরঘাট হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে নিয়া যায়। বাদীনিকে সেখানে নাস্তা করায়। পরে আসামি নাজমুল হাসান বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে লঞ্চে করে বাদীনিকে চাঁদপুর নিয়ে যায়। চাঁদপুর পৌঁছানোর পর আসামি হাসান আল মামুনকে দেখতে না পেয়ে বাদীনির সন্দেহ হয়। তখন আসামি নাজমুল হাসানকে দ্রুত ঢাকা ফেরার জন্য বলেন। আসামি নাজমুল হাসান বাদীনিকে নিয়ে বিকেলে লঞ্চের কেবিনে অবস্থান করে। পরে বাদীনিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আসামি নাজমুল হাসান জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
এ সময় বাদীনি কান্নাকাটি করলে আসামি সোহাগ তাকে নষ্ট মেয়ে বলে ভয়ভীতি দেখায় এবং কান্না করে কী লাভ হবে বলে জানায়। গত ২৯ মে আসামি সোহাগ বাদীনিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য Arohi sima, Baishaki Das নামক ফেক আইডি খুলে বিভিন্ন সেক্সুয়াল গ্রুপে তার মোবাইল নম্বর ছড়িয়ে দেয়। বাদীনি এ বিষয়ে ২০ জুন বিবাদী নূরুল হক নুরকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানায়। পরে নূরুল হক নুরু বাদীনিকে তার সঙ্গে কথা বলে সুব্যবস্থা করে দেবে বলে আশ্বস্ত করে।
পরে গত ২৪ জুন আসামি নুরুল হক নুরু বাদীনিকে নীলক্ষেত দেখা করার জন্য বলে। সেখানে আসামি নূরুল হক নুর তাকে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন এবং তা করলে ভক্তদের দিয়ে তার নামে উল্টাপাল্টা পোস্ট দেয়া এবং বাদীনিকে পতিতা বলে প্রচারের হুমকি দেন।