বিদেশ ফেরতদের বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
নিউজ ডেস্কঃ
ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় দেশের বিমানবন্দরসহ সব প্রবেশ পথে যাত্রীদের বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বিদেশ ফেরতদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার সকালে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস-২০২০’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনলাইনে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার সময় এসেছে, বিদেশ থেকে আগতদের পরীক্ষা করা ও কোয়ারেন্টাইনে রাখার। এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি পোর্টে আগের মত ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে কেউ ঢুকতে গেলেই সে করোনাভাইরাস নিয়ে ঢুকছে কিনা- সেটা পরীক্ষা করতে হবে। দেশের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আশা করি, সেটা আপনারা করবেন।
দেশের অর্থনীতির গতিশীলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের অর্থনীতি যেমন গতিশীলতা পেয়েছে, তেমনি আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
যুবকদের জন্য সরকার প্রদত্ত নানা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে তাদেরকে নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক বা উদ্যোক্তা হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। সরকার ফ্রিল্যান্সারদের স্বীকৃতির জন্য সনদ প্রদানের চিন্তা-ভাবনা করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এ বছরের বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ২১ জন স্বনির্ভর যুবক এবং ৫টি সফল যুব সংগঠনকে যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এ পুরস্কার দেয়া হয়।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আখতার হোসেন অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন। পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে সাইফুর রহমান ও সামিয়া রহমান অনুষ্ঠানে নিজ নিজ অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস-২০২০ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকেট এবং খামও অবমুক্ত করা হয়। ‘মুজিবর্ষের আহ্বান, যুব কর্মসংস্থান’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সারাদেশে দিবসটি উদযাপিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পুনরায় ব্যাপকভাবে দেখা দেয়ায় এরই মধ্যে ইংল্যান্ডসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লকডাউন করা হয়েছে। কাজেই আমাদের সবাইকে একটু সুরক্ষিত থাকতে হবে। যেকোনো কাজে সবাই মাস্ক ব্যবহার করবেন। কোনো জনসমাগম, মার্কেট বা কারো সঙ্গে যখন মিশবেন তখন অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করে নিজেকে ও অপরকে সুরক্ষিত করবেন।
প্রধানমন্ত্রী সকলকে যথাযথভাবে করোনা প্রতিরোধের নিয়মকানুনসমূহ মেনে চলতে বলেন এবং এ বিষয়ে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
করোনা মোকাবিলার জন্য তার সরকার ঘোষিত ১ লাখ ১২ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা দিয়েছি যেন আমাদের অর্থনীতির গতিটা অব্যাহত থাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের যথাযথ পদক্ষেপে দেশের অর্থনীতি এখনও সচল রয়েছে, যেটা অনেক উন্নত দেশও এখন করতে পারছে না। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশের টানেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প ও রাস্তা-ঘাটসহ অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে যেগুলো সম্পন্ন হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
অতীতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তার সরকার ঘোষিত ২১ দফা নির্দেশনা প্রদানের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।