সেই মারিয়াকে নিয়ে খেলায় মাতলেন ডিসি
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে পরিবারের সব স্বজন হারানো সেই মারিয়া সুলতানা এখনও রয়েছে জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস.এম মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে।
মঙ্গলবার বিকেলে মারিয়াকে নেয়া হয় ডিসি বাংলো কার্যালয়ে। এ সময় শিশু মারিয়াকে কোলে নিয়ে খেলায় মাতেন ডিসি মোস্তফা কামাল।
গত ১৫ অক্টোবর ভোররাতে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হন খলিসা গ্রামের মাছের ঘের ব্যবসায়ী মো. শাহিনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী (৯) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানা (৬)।
ছয় মাসের মারিয়াকে হত্যা না করে মায়ের লাশের পাশে ফেলে রাখা হয়। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন নিহত শাহিনুর রহমানের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম।
সিআইডি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় রায়হানুল। তিনি জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরে একাই তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। বর্তমানে তিনি জেলহাজতে রয়েছেন।
ঘটনার দিন নিহতদের বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে পরিবারের সব সদস্য হারানো মারিয়া সুলতানার দায়িত্ব নেন জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল। তার পক্ষে হেলতলা ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য নাসিমা বেগমকে শিশুটির দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া হয়।
শিশুটি হেফাজতে রাখা নাসিমা বেগম জানান, ডিসি স্যারের নির্দেশনায় বিকেলে মারিয়াকে নিয়ে তার বাংলো কার্যালয়ে যাওয়া হয়। তিনি মারিয়ার সার্বিক খোঁজ খবর নেন। খেলায় মেতে উঠেন। শিশুটিকে দত্তক নিতে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শিশুটির নানি ও দাদি তাদের কাছে নিতে চায়। তবে ডিসি স্যার জানিয়েছেন, যেহেতু চাচা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এ কারণে নানি বাড়ির হেফাজতে দেয়া হবে। তবে এখনও দেওয়া হয়নি। শিশুটি এখনও আমার হেফাজতে রয়েছে।
শিশুটির মামা কলারোয়া উপজেলার যুগিখালী ইউনিয়নের উফাপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এখন ডিসি স্যারের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। মারিয়াকে আমাদের কাছে রাখতে চাই। এখনও ডিসি স্যার আমাদের কিছু জানায়নি। যেহেতু ওই পরিবারের সদস্যের হাতে সবাই খুন হয়েছে। তাই ওখানে মারিয়ার জীবন নিরাপদ নয়।
জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল বলেন, মারিয়া তার মা, বাবা, ভাই, বোনকে এক রাতে হারিয়েছে। মারিয়ার দাদি ও নানা নানি উভয়েই তাকে নিজেদের কাছে রেখে মানুষ করতে চায়। এছাড়াও শতাধিক নিঃসন্তান দম্পতি মারিয়াকে দত্তক নিতে আগ্রহী। মারিয়া এখন ভালো আছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষে মহিলা ইউপি সদস্য নাসিমা বেগম তাকে দেখাশুনা করছে।