হাজী সেলিমের ছেলের বারান্দায় ‘সোনার’ দূরবীণ, নজরে পুরো এলাকা
ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিমের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। র্যাবের অভিযানে অবৈধভাবে মজুত মদ, অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ ওয়াকিটকি, ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় তার বারান্দায় পাওয়া যায় একটি সোনালি রঙের দূরবীণ।
সোমবার দুপুরে পুরান ঢাকার সোয়ারিঘাটের দেবদাস লেনে ওই বাড়িটি ঘেরাও করে অভিযান শুরু করে র্যাব। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম অভিযানের নেতৃত্বে দিয়েছেন।
জানা গেছে, সাদা রঙের নয়তলা এ ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় থাকেন হাজী সেলিমের ছেলে এরফান সেলিম। তার প্রতিটি রুমের বারান্দায়ই বিভিন্ন রকমের জিনিসপত্রে সজ্জিত। এর মধ্যে তৃতীয় তলার একটি বারান্দায় রয়েছে নজরকাড়া সোনালি রঙের এই দূরবীণ। এ দূরবীণের মাধ্যমেই এরফান সেলিম এলাকার আশেপাশের পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখতেন।
র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, সাদা রঙের নয়তলা এ ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, গুলি, একটি এয়ারগান, ৩৭টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া, বিদেশি মদ ও বিয়ারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের কোনো বৈধ কাগজ এখনো দেখাতে পারেননি। আর ওয়াকিটকিগুলোও অবৈধ, কালো রঙের এসব ওয়াকিটকি শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করতে পারেন। অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, সোয়ারি ঘাট এলাকায় এমপি হাজী সেলিমের একটি বাড়ি আছে, সেটা ঘেরাও করে র্যাব সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছে। র্যাব সদস্যরা হাজী সেলিমের ছেলে এরফানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
এর আগে, রোববার রাতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে তার ছেলে ইরফান ও তার কতিপয় সঙ্গী নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করেন। রাজধানীর কলাবাগান সিগন্যালের পাশে ঘটনাটি ঘটে। রাতেই এ বিষয়ে জিডি এবং সোমবার ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
মামলার এজাহার অনুযায়ী নৌকর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমেদ খান রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে কলাবাগানের দিকে যাচ্ছিলেন। ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে স্টিকার লাগানো কালো রঙের ল্যান্ড রোভার গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৫৭৩৬) পেছন থেকে তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এরপর ওই কর্মকর্তা সড়কের পাশে মোটরসাইকেল থামিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দেন। কিন্তু গাড়ি থেকে আসামিরা বের হয়ে তাকে অপদস্থ ও কিল ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করেন। পরে তার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে লোকজন জড়ো হলে তারা নিজেদের গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই গাড়ি ও নৌ বাহিনীর কর্মকর্তার মোটরসাইকেল দুটোই ধানমণ্ডি থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনার পর অফিসারের স্ত্রী, স্থানীয় জনতা ও পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডি থানার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায় অফিসারকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্যে।