সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বড় ভাইয়ের পরিবারের চার জনকে কুপিয়ে হত্যা করে ছোট ভাই
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের দুই শিশু সন্তানসহ একই পরিবারের চার জনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত শাহিনুরের ভাই রায়হানুল ইসলাম সিআইডি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি চাপাতি। আজ বুধবার বিকালে সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং-এ সিআইডি পুলিশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক ওমর ফারুক বিষয়টি জানিয়েছন।
প্রেস ব্রিফিং-এ তিনি জানান, কোমল পানীয়ের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে তার ভাই, ভাবী ও দুই শিশু সন্তানসহ পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে এবং জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। ভাই ও ভাবীর মানসিক নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে হত্যা করা হয়। নিহতের ছোট ভাই রাইহানুল ইসলাম পুলিশ রিমান্ডে এ ধরনের স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তিনি বলেন, রায়হানুল বেকার জীবন যাপন করত। ভাইয়ের সংসারে বেকার যুবক রাইহানুল ইসলাম প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতনের শিকার হতো। এমনকি ভাই ও ভাবি খাওয়ার জন্য তাকে খোটাও দিত। ঘটনার দিন রাতে ভাই তাকে গালিগালাজ করে। যার কারণে রাইহানুল ভাই ও ভাবিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। আর তাই কোমল পানীয়ের সাথে চেতনা নাশক ঔষধ মিশিয়ে সবাইকে খাওয়ানো হয়। এরপর রাতে ঠান্ডা মাথায় ধারালো চাপাতি দিয়ে আপন ভাই শাহিনুর ইসলামকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করা হয়। এরপর ভাবি সাবিনা খাতুনকে হত্যা করার সময় তাদের দুই শিশু সন্তানের ঘুম ভেঙে গেলে তাদেরও হত্যা করে রায়হানুল। এসময় বেঁচে যায় তাদের চার মাস বয়সের শিশু মারিয়া। তিনি বলেন, রায়হানুলের দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থল হেলাতলা ইউনয়নের খলিসা গ্রামের একটি পুকুর থেকে আজ দুপুরে এ হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি চাপাতিও উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রায়হানুলকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদানের জন্য বিকালে সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। প্রেস ব্রিফিং-এ আরো উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশ সুপার আনিচুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত থাকা অভিযোগে গতকাল বিকালে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো। গ্রেপ্তারকৃত তিনজন হলেন, উপজেলার খলিসা গ্রামের আবদুর রাজ্জাক, একই গ্রামের আবদুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল ইসলাম।
উল্লেখ্য ঃ গত ১৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) ভোর রাতে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে মৎস্য হ্যাচারী মালিক শাহিনুর, তাঁর স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও মেয়ে তাসনিম সুলতানাকে জবাই করে হত্যা করে দূর্বৃত্তরা। এ সময় নারকীয় এই হত্যাকান্ডের মধ্যে ঘাতকদের হাত থেকে জীবনে বেঁচে যায় তাদের চার মাসের শিশু কন্যা মারিয়া সুলতানা।