স্বাধীন বাংলার ফুটবলার নওশের মারা গেছেন
মহামারি করোনাভাইরাসের কাছে হেরে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম নায়ক নওশেরুজ্জামান।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে ৭২ বছর বয়সে মারা যান সাবেক এই স্ট্রাইকার (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
জানা গেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মুন্সিগঞ্জে দ্বিতীয় জানাজা শেষে চাঁদপুরে তাকে দাফন করা হবে।
সপ্তাহখানেক জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে চির বিদায় নিলেন সাবেক এ ফুটবলার। তার চাচাতো ভাই ক্রীড়া সাংবাদিক সাইদুজ্জামান বলেন, নওশের ভাইকে শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো যায়নি। লাইফ সাপোর্ট দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি আমাদের সবাইকে ফেলে অন্যলোকে চলে গেছেন।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য নওশের ছিলেন নামি স্ট্রাইকার। স্বাধীনতার আগে খেলেছেন রেলওয়ে, ওয়ারী, ফায়ার সার্ভিস ও ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবে। স্বাধীন বাংলা দলের হয়ে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় খেলেছেন তিনি।
স্বাধীন বাংলাদেশে ওয়াপদাতে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪, মোহামেডানে ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ ও ওয়ান্ডারার্সে ১৯৭৮ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত খেলেছেন। আর জাতীয় দলে ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত খেলেছেন সুনামের সঙ্গে।
ফুটবল ছাড়াও ক্রিকেটে তার দাপট কম ছিল না। সেখানেও সমান পারদর্শী ছিলেন। মোহামেডানের মতো দলে নিয়মিত খেলে গেছেন সাবেক এই ওপেনার। এছাড়া ভিক্টোরিয়াতে তিন ও কলাবাগানে খেলেছেন পাঁচ বছর।
খেলাধুলায় বিশেষ অবদান রাখায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্লু’ পদক পাওয়া সাবেক এই স্ট্রাইকারকে একটা আক্ষেপ নিয়েই ছাড়তে হলো পৃথিবী। মৃত্যুর আগে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেখে যাওয়া হলো না তার।
মাসের শুরুতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন নওশের। রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল ও গ্রীন লাইফ হয়ে শেষ পর্যন্ত ইবনে সিনায় ভর্তি হয়েছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে রাখতে হয়েছিল। তার চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফ) সভাপতি কাজী মো: সালাহউদ্দিনসহ সব স্ট্যান্ডিং কমিটি, সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ আন্তরিক শোক প্রকাশ এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে।