ট্রাম্পকে পাঠানো হলো বিষযুক্ত চিঠি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
আগামী ৩ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঠিকানায় বিষাক্ত রাইসিনের চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তবে সেটি ট্রাম্পের কাছে পৌঁছার আগেই সনাক্ত করেছে নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তারা।
ওই চিঠিটি পরপর দু’বার পরীক্ষা করা হয়। দু’বারই বিষাক্ত রাইসিনের উপস্থিতি টের নিশ্চিত হন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি বলছে, রাইসিন এতটাই বিষাক্ত যে মাত্র কয়েক ফোটা লবণ দানার পরিমাণ একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটাতে পারে। রাইসিন কোনোভাবে খেয়ে ফেললে, নিশ্বাসের সঙ্গে অথবা ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে মাথা ঘোরা, বমি শুরু হয়। এরপর শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হতে থাকে। কতটুকু পরিমাণ রাইসিন শরীরে প্রবেশ করেছে তার উপর নির্ভর করে ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটে।
রাইসিনের বিষক্রিয়া প্রতিরোধে কোনো প্রতিষেধক নেই। ল্যাব পরীক্ষাতেও রাইসিনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এবং প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিস এখন তদন্ত করে দেখছে যে এই চিঠি কোথা থেকে পাঠানো হয়েছে। অন্য আরো কাউকে একই ধরনের চিঠি পাঠানো হয়েছে কিনা সেটিও তদন্ত করছে সংস্থা দুটি।
মার্কিন টেলিভিশন সিএনএনকে এফবিআই জানিয়েছে আপাতত কোনো ধরনের ঝুঁকি তারা দেখছেন না।
নিউ ইয়র্ক টাইমসকে আর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন চিঠিটি কানাডা থেকে পাঠানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গেছে, কানাডাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। কানাডার জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের প্রধান মুখপাত্র ম্যারি-লিজ পাওয়ার জানিয়েছেন এই ঘটনা উদঘাটনে তারা মার্কিন সংস্থাকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে। তবে তদন্তের আগে এ বিষয়ে তারা আর কোনো কথা বলতে রাজি নয়।
এই ঘটনার পর হোয়াইট হাউজের ঠিকানায় পাঠানো সকল পার্সেলের বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন থেকে কোনো পার্সেল একাধিকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া হোয়াইট হাউজে ঢুকবে না। পাশাপাশি একই ধরনের অন্যান্য প্যাকেটগুলোও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে এর আগেও হোয়াইট হাউজকে উদ্দেশ্য করে রাইসিন মেশানো চিঠি পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও অন্যান্য কয়েকজন কর্মকর্তাকে রাইসিনের গুড়ো মেশানো চিঠি পাঠানোর দায়ে ২০১৪ সালে মিসিসিপির এক ব্যক্তিকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এর চার বছর পর ২০১৮ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দফতর ও হোয়াইট হাউজে একই ধরনের চিঠি পাঠানোর জন্য একজন সাবেক সেনা সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়।
সূত্র: বিবিসি