করোনাকালে কেমন কাটছে তরুণ নৃত্যশিল্পীদের জীবন,দেখুন দৈনিক সাতক্ষীরা ফেসবুক পেজে

আমাদের দেশে নাচের হালচাল অবস্থান, অবস্থা, ভবিষ্যৎসহ নানা বিষয়ে আড্ডা দিয়েছেন এ সময়ের কয়েকজন নৃত্যশিল্পী নাঈম, রিমি, কেনি

শরিবার রাত ঠিক ৮.০০ টায় সরাসরি আনুষ্ঠানটি দেখতে পাবেন দৈনিক সাতক্ষীরা ফেসবুক পেজে
live link ;https://www.facebook.com/DainikSatkhira.com
    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগ এ ৪র্থ বর্ষে অধ্যয়ন করছি। বিভাগের নির্দেশনায় ভরতনাট্যম নিয়ে বিশদভাবে পড়াশোনা করছি। পাশাপাশি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র বছর ব্যাপি শাস্ত্রীয়নৃত্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অধীনে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক র্যাচেল প্যরিস এর কাছে গৌড়ীয় নৃত্যর উপর প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। একই সাথে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নৃত্যশিল্পী’ হিসেবে কাজ করছি। এছাড়া একাডেমিক পড়াশুনার বাইরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজগন্জ এর ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন “যমুনা”তে সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে রয়েছি। এসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন এর সাথে যুক্ত হয়ে সুষ্ঠ নৃত্যচর্চা করে আসছি।

ছোট বেলা থেকে নাচের ইচ্ছা থাকলেও কখন শেখা সুযোগ হয় নি। বিশ্ববিদ্যালয় এ এসেই নাচ শেখা শুরু। বিভাগ এর কল্যাণ এ বড় বড় নৃত্যগুরু এর কাছে তালিম নেওয়ার সুযোগ পাই।শ্রদ্ধেয় শিক্ষক র্যচ্যাল প্যারিস,বেলায়েত হোসন খান,তামান্না রহমান,মনিরা পারভিন এরা সকলে খুবই আন্তরিকতার সাথে আদের তৈরি হতে সাহায্য করেন। বিভাগীয় শিক্ষক তামান্না রহমান ম্যাম এর সাহায্যে বহু গুনীজনদের কাছে বিভিন্ন নৃত্যধারার উপর ওয়ার্শপ করার সুযোগ পাই।র্যচেল প্রিয়াংকা ম্যাম এর মাধ্যমে বাংলার শাস্ত্রীয় নৃত্য গৌড়ীয় সম্পর্কে জানতে পারি , এবং শিল্পকলা একাডেমির আন্ডারে ম্যাম এর কাছে তালিম নেওয়া শুরু করি। বিভাগের নির্দেশনায় ভরতনাট্যম নাচ শিখলেও আমি বাংলার নিজস্ব সস্কৃতির নৃত্য গৌড়ীয় করতে বেশি পছন্দ করি। নিজের পরিবেশনা গুলোতে আমি গৌড়ীয় অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করতে স্বাদছন্দ বোধ করি।
বর্তমানে কভিড-১৯ এর দরুণ সবকিছুই প্রায় অচল। ঘর-বন্দি এই সময়কে কাজে লাগানোর জন্য বাড়িতে বসেই কাজ করার চেষ্টা করছি। এ ক্ষেত্রে অনলাইন এর মাধ্যমে আমার শিক্ষকদের সাহায্য ও পরামর্শ পাচ্ছি। উল্লেখ্য যে, কিছুদিন আগে আমার করা একটি নাচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আশানুরূপ সাড়া তৈরি করেছে।
করোনার এই মহামারির সময় আগের মতো কাজ বা রিহার্সেল কিছু করা হয়ে উঠছে না। অনলাইন এ ক্লাস হলেও, নেটওয়ার্ক ও পরিবেশের দরুণ কার্যকর ফল হচ্ছে বলে মনে হয় না। সবকিছু ঠিক হয়ে, সুদিন আসবে, এই প্রত্যাশা করি।
 কামরুন নাহার কেনি
এ আই ইউ বি তে ইলেক্ট্রিকাল ইলেকট্রনিক্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ ৩য় বর্ষে অধ্যয়ন করছি। ছোটবেলা থেকে নৃত্য করছি। ঝন্টু স্যার এর কাছ থেকে নাচ শুরু করি।।তারপর সঞ্চারি একাডেমি তে মতিন স্যার এর কাছ থেকে ভরতনাট্যম আর মনিপুরি করলাম। ২০১৫ সালে শিল্পকলায় ১বছরের স্কলারশিপ পেয়ে লোকনৃত্য ( দিপা ম্যাম) কত্থক(তাবাসসুম ম্যাম)এর কাছ থেকে শিক্ষা প্রাপ্ত হয়।এছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে বিভিন্ন সময়ে নাচের উপর কর্মশালা করেছি।
বর্তমানে কভিড-১৯ এর দরুণ সবকিছুই প্রায় অচল। ঘর-বন্দি এই সময়কে কাজে লাগানোর জন্য বাড়িতে বসেই কাজ করার চেষ্টা করছি। এ ক্ষেত্রে অনলাইন এর মাধ্যমে আমার শিক্ষকদের সাহায্য ও পরামর্শ পাচ্ছি।
করোনার এই মহামারির সময় আগের মতো প্রোগ্রাম বা রিহার্সেল কিছু করা হয়ে উঠছে না। অনলাইন এ ক্লাস হলেও, নেটওয়ার্ক ও পরিবেশের দরুণ কার্যকর ফল হচ্ছে বলে মনে হয় না। ইন শা আল্লাহ সবকিছু ঠিক হয়ে, সুদিন আসবে, এই আশা করি।
জোবায়ের হোসেন নাঈম
 পুরুষ হয়েও জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রখ্যাত নৃত্যগুরুদের সান্নিধ্যে থেকে নিজেকে একজন সুস্থ্য সংস্কৃতি ধারার নৃত্যশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সকল বাধা- বিপত্তি পেরিয়ে নৃত্যে তালিম নিয়ে যাচ্ছেন নিরলস ভাবে। যার কথা বলছি তিনি আর কেউ নন..বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের তরুণ একজন নৃত্যশিল্পী সাতক্ষীরার সন্তান মোঃ জোবায়ের হোসেন নাঈম। তার সাথে কথা বলে জানতে পারি নাচ নিয়ে মিডিয়া’তে পথচলার গল্প… দর্শক এবং পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হল-
ছোট্টবেলা থেকে নাচের প্রতি অন্যরকম এক ভালো লাগা ছিলো তবে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে নাচ শেখার শুরুটা হয় যখন ৭ম শ্রেণী’তে পড়ি তখন থেকে। আমার নাচে হাতেখড়ি হয়েছি গুরু সাথী হালদারে’র নিকট।ম্যাম সেই শুরু থেকেই বলতেন নাঈম একদিন ভালো কিছু করবে।ম্যামের কাছে ৯ম শ্রেণী পড়া পর্যন্ত নাচ শেখা হয়েছিলো।এই সময়টা আমার পরিবারে আমার “আম্মু” ছাড়া আর কেউ জানতো না যে আমি নাচ শিখছি।সাতক্ষীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমী ও জেলা প্রশাসন, সাতক্ষীরা আয়োজনে ১লা বৈশাখৈর অনুষ্ঠানে দলীয় এবং দৈত্ব নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে আমার মঞ্চে অভিষেক হয়।পরবর্তীতে,জেলা শিল্পকলা একাডেমী, দীপালোক একাডেমীতে যুক্ত থেকে অনেক কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এসএসসি শেষ করে পড়াশোনার সুবাদে ঢাকাতে শিফট হওয়ার পর মূলত নাচটাকে ধীরে ধীরে পেশা হিসেবে নিয়ে নিয়েছি। ঢাকাতে গিয়ে প্রথম নাচ শেখা হয় বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী, মডেল ও অভিনেত্রী নুসরাত জান্নাত রুহী ম্যামের কাছে।ম্যামের কাছে শেখা অবস্থায় আমাকে বুলবুল ললিতকলা একাডেমী “বাফা”র. কমলাপুর শাখায় ভর্তি করে দেন।পরবর্তীতে বাফার অন্য শাখা থেকে কোর্স সম্পন্ন করি। আমি বর্তমানে বাংলাদেশের প্রখ্যাত নৃত্য গুরু,নৃত্য পরিচালক ও মুক্তিযোদ্ধা শ্রদ্ধেয় দীপা খন্দকার ম্যামের কাছে থেকে নাচের কম্পোজিশন, লোকনৃত্য ও সাধারণ নৃত্যে তালিম নিচ্ছি। একই সাথে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিচালক,নৃত্যনন্দিনী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় র্যাচেল প্রিয়াঙ্কা প্যারিস ম্যামের কাছে বাংলার শাস্ত্রীয় নৃত্য গৌড়ীয় নৃত্যে তালিম নিচ্ছি। কন্টেমপোরারি ও কত্থক নৃত্যে তালিম নিচ্ছি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার শ্রদ্ধেয় তাহনুন আহমেদী স্যার এবং প্রিয় দিদি মৌমিতা জয়া’র কাছে।বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী’তে প্রশ্রুতিবদ্ধ নৃত্যশিল্পী হিসেবে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী’র বছরব্যাপী শাস্ত্রীয় নৃত্যের প্রশিক্ষণ কোর্সে গৌড়ীয় নৃত্যে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি।
আমার গুরুদের নির্দেশনায় নিয়মিত মঞ্চে ও টিভিতে নৃত্য পরিবেশনা করা হয় নিয়মিত।মাস তিনেক আগে Nayeem’s Creation নামে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করেছি। সেখানেও নিয়মিত নাচের ভিডিও আপলোড করছি।
এই করোনাকালে সাংস্কৃতিক অঙ্গন আজ স্তমিত।শিল্পীরা আজ ভীষণ রকম বিপর্যয়ের মধ্যে।সরকার এবং সমাজের উচ্চবিত্তদের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে পুরো সাংস্কৃতিক অঙ্গনটাই হুমকির মুখে পড়বে।জীবিকার তাগিদে অনেকেই নিজেদের পেশা বদলে নিচ্ছেন।আমরা সাময়িক কোনো অনুদান বা আর্থিক প্রণোদনা চাই না। শিল্পীদের সম্মানীর বিনিময়ে স্বল্প পরিসরে মঞ্চ,টিভি এবং অনলাইন প্রোগ্রামের ক্ষেত্র তৈরি করা গেলে সেটাই শিল্পীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যের হবে। সুস্থ্য হয়ে উঠুক পৃথিবী সেই অপেক্ষায়। ধন্যবাদ সবাইকে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)