শ্রীউলায় বিকল্প রিং বাঁধ নির্মান কাজ এগিয়ে চলেছে
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি :
অনেক জল্পনা কম্পনার অবসান ঘটিয়ে আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নে বিকল্প রিং বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। বাঁধটি নির্মীত হলে শ্রীউলা ইউনিয়নের বৃহত্তর জনগোষ্ঠি ও আশাশুনি সদরের গ্রামসমুহ প্লাবনের হাত থেকে সাময়িকভাবে রক্ষা পাবে।
আম্ফানের তান্ডবে শ্রীউলা ইউনিয়ন ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের হিজলিয়া কোলা এলাকার পাউবো’র বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে এবং পরববর্তীতে খোলপেটুয়া নদীর অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও অবিরাম বৃষ্টিপাতে এলাকার বাধ ভেঙ্গে শ্রীউলা ইউনিয়নের ২২ টি গ্রাম এবং আশাশুনি সদরের ৯টি গ্রাম ও প্রতাপনগরের ২টি গ্রাম প্রবল ¯্রােতে একাকার হয়ে যায়।
তিন মাস পার হলেও বাঁধ নির্মান কাজ সম্ভব হয়নি। সবশেষে বিভাগীয় কমিশনার, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে এলাকার বৃহত্তর অংশকে রক্ষার্থে মাড়িয়ালা থেকে কোলাগামী সড়কের উপর দিয়ে রিং বাঁধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু বাঁধ নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হলে কিছু মানুষ বিশেষ করে রিং বাঁধের বাইরে থাকা মানুষের একটি অংশ একাজে বাধ সাধেন। অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অসহায় মানুষের দুঃখ দুদর্শার কথা বিবেচনা করে মানুষকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করে বিকল্প বাঁধের ব্যবস্থার কাজ শুরু করলেন ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল। এখবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দীর্ঘদিনের পানি বন্ধি সহায় সম্বল হারা মানুষের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস লক্ষ্য করা গেছে।
তারা বলছে চেয়ারম্যান সাকিলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিকল্প বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে, এবার বুঝি পানি বন্ধি থেকে মুক্তি পাবো। ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল ও পানিবন্ধি মানুষরা জানান, ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে তিন মাস অতিবাহিত হলেও হাজরাখালী বহুল আলোচিত বেড়ী বাঁধটি নির্মান কাজ সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে সরকার কর্তৃক লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দিলেও বাঁধ নির্মানে শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব না হওয়ায় এলাকাবাসীর সাথে আলোচনার ভিত্তিতে এই বিকল্প বাঁধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত পনের দিনের ব্যবধানে শ্রীউলা ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী আশাশুনি সদর ইউনিয়ন এর হাজার হাজার মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়ে। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের, গৃহহীন হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। এরা সাইক্লোন সেল্টার সহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে এবং অসংখ্য মানুষ ইউনিয়ন ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বার বার খবর ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু বাঁধটি নির্মানে বিলম্ব হওয়ায় এই বিকল্প ব্যবস্থাটি গ্রহণ করা হয়েছে। বিকল্প বাঁধের কাজ শেষ দু/একটি গ্রাম বাদে বাকি গ্রামগুলো পানি বন্ধি থেকে মুক্তি পাবে। হাজার হাজার সহয় সম্বল হারা মানুষ নিজ জন্ম স্থানে ফিরে আসতে পারবে। তিনি আরও বলেন, প্লাবিত এলাকায় বেশির ভাগ গ্রাম বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, সুপেয় পানির সংকট দেখা দেওয়ায় শত শত মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। সন্ধ্যার পরে প্লাবিত এলাকাটি দেখলে এটি মানুষের বাড়ি না ভূতের বাড়ি বোঝার কোনো উপায় থাকে না। এলাকায় বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন ও সুপেয় পানি ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।