তালা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মশিয়ার পরিবারের দাবী
প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার রহমানের জনপ্রিয়তার কারণে প্রতিপক্ষরা তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। ছাত্র জীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। দীর্ঘ নয় বছর তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। এরপরই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন সরদার মশিয়ার। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষানিত হয়ে রাজনীতির মাঠ থেকে তাকে সরাতে প্রতিপক্ষরা নয়া কৌশল করে তাকে লুৎফর নিকারীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িয়েছে।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার রহমানের পরিবারের পক্ষ থেকে তালা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত কথা গুলো বলেন তার বড় ভাই সরদার গোলজার হোসেন।
এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন,লুৎফর নিকারী হত্যা মামলায় মশিয়ারকে ফাঁসাতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য লুৎফর নিকারী হত্যার মামলা মোটিভ ঘোরানোর চেষ্টা করছে। তার প্রমান স্বরুপ দেখেন, মুত্যু’র পরে বিচারের দাবীতে জেলা প্রসাশকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে স্মারক লিপি দিয়েছে, সেখানে স্পষ্ট ভাবে সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে জড়ানো হয়েছে। এই ইউনিয়নের প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা সরদার মশিয়ার এবং সরদার জাকির হোসেনকে নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় সরদার মশিয়ারকে হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছে।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে জানান, সরদার মশিয়ার রহমান উপজেলার জেয়ালা নলতা গ্রামের সন্নিকটে নলবুনিয়া বিলে ১২০ বিঘা জমিতে একটি মাছের ঘের পরিচালনা করে আসছিলো। কিন্তু গত ১৭ আগষ্ট দিবাগত রাতে জেয়ালা নলতা গ্রামের নিকারী পাড়ার লুৎফর রহমান নিকারীর পুত্র সেলিম নিকারীসহ ১০/১২ জন একসাথে মিলে মাছ লুট করার উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে ঘেরে মাছ ধরতে থাকে। একপর্যায়ে ঘেরের পার্শ্ববর্তী বাসার পাহারাদাররা জানতে পেরে ডাক চিৎকার বা হাকাহাকি করতে থাকিলে আসামীগণ তাদের দিকে হাতে থাকা অস্ত্রাদি প্রদর্শন করত; আসামীগণ উক্ত ঘের হইতে বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্যাদি ও ঘেরের মেইন বাসা হতে অন্যান্য মালামালসহ নগদ টাকা নিয়ে চলে যায়।
এদিকে সেলিম নিকারী উক্ত ঘেরে মাছ লুট করতে গিয়ে ধরা পড়েছে এমন খবর শুনে সেলিম নিকারীর পিতা লুৎফর রহমান নিকারী ঐ রাতে হন্তদন্ত হয়ে ঘেরের দিকে আসার পথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে রাস্তার উপর পড়ে যান। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। যতদূর জানা যায়, মৃত লুৎফর রহমানের হার্টের অসুখ ছিল এবং নিয়মিত হার্টের ওষুধ গ্রহণ করতেন। লুৎফর রহমান অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে সংবাদ পেয়ে আমার ছোট ভাই সরদার মশিয়ার রহমান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাকে দেখার জন্য হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারে যে লুৎফর রহমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। অথচ তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষগণ ষড়যন্ত্রমুলকভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াটি কাহিনী সৃষ্টি করে লুৎফর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে সরদার মশিয়ার রহমানসহ তিন জনকে আসামী শ্রেনীভুক্ত করে তালা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। উক্ত মামলায় আমার ছেঅট ভাই সরদার মশিয়ার রহমান গ্রেফতার হয়ে জেল-হাজতে আছে। তবে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকের ভাষ্য মতে, মৃতঃ লুৎফর রহমান নিকারীর শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সুতরাং এ কথা বলা যায় যে, তাকে কেউ হত্যা করে নাই।
তিনি আরও জানান, লুৎফর নিকারীর মৃত্যু ঘটনার আবেগকে পুঁজি করে কতিপয় ব্যক্তি আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। তারা আমার ছোট ভাই সরদার মশিয়ারের সামাজিক, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও বিগত দিনের নির্বাচনে পরাজিত পক্ষ। সম্প্রতি তাদের দেয়া স্মারকলিপিতে রাজনৈতিক নোংরামী প্রতিফলিত হয়েছে। তারা ক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের বিভিন্নভাবে উস্কানি দিচ্ছেন, যার ফলে প্রতিহিংসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তারা প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে তদন্ত কাজে বাধা ও বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়ার পায়তারা করছে। এর মাধ্যমে তারা তাদের অপরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চায়। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেন। নিজ দলীয় প্রতিপক্ষ নির্বাচনের আগে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তালা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রারম্ভে আপোষ করার জন্য সাতক্ষীরায় ডেকে নিয়ে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এসময় হাসপাতালে বেশ কিছুদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে সরদার মশিয়ার রহমান। পরবর্তীতে তালাবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থণে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত আমার আরেক ছোটভাই তালা সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন। তিনিও বিগত নির্বাচনে ব্যাপক জন সমর্থণ পেয়ে নির্বাচিত হন। তার সাথে নির্বাচনে যারা ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন তারাই এখন সরদার মশিয়ারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ষড়যন্ত্রকারীদের কুটকৌশলে সরদার জাকির হোসেনকেও এক সময় আটক করে নির্যাতন চালানো হয়। এমনকি তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। এলাকাবাসীর ব্যাপক সমর্থণ ও দোয়ার কারণে সে সময় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তার সাথে নির্বাচনে পরাজিত পক্ষ বিভিন্নভাবে তাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এ কথা বিশ^াস করি আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তবে কিসের জন্য এই উস্কানিমূলক আচরণ। এবিষয়ে আমরা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এই তৎপরতা থেকে এটাই প্রমাণিত হয় ঘটনাটি নিয়ে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। তা না হলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার আগেই কেন এই দোষারোপ। আমরা এ ঘটনার সুষ্ট তদন্তের দাবী জানাচ্ছি। যেনো কেউ ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকার করতে না পারে।