সাতক্ষীরায় অনলাইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে সংলাপ

সাতক্ষীরায় রবিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বে-সরকারী সংস্থা অগ্রগতির আয়োজনে প্রাকটিক্যাল ট্রেনিং এন্ড রিসোর্স সেন্টারে অনলাইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে শিশুদের যৌন নির্যাতন পরিস্থিতি জানাতে জেলা শিশু অধিকার বোর্ডের সদস্য ও ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অত্র সংলাপে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন অগ্রগতি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সবুর বিশ্বাস।অত্র অনুষ্ঠানে জেলা শিশু কল্যান বোর্ডের সম্মানিত সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন অফিস থেকে পুলক কুমার চক্রবর্তী, অধ্যাপক আব্দুল হামিদ, শহর সমাজ সেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারি পরিচালক বাবুল আক্তার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহ আলম, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শেখ রফিকুল ইসলাম, জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার সুমনা শারমিন, সমাজ সেবা কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা, ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্সের শরিফুল ইসলাম, ব্রাকের প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম এবং অনলাইন সংবাদপত্র ভয়েস অব সাতক্ষীরার বার্তা সম্পাদক শাহিদুর রহমান।

এছাড়া ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী সংস্থার পক্ষ থেকে বাংলালিংকের জোনাল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।

এসময় সম্মানিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) ‘বাংলাদেশের শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক জরিপে দেখা গেছে যে দেশের ২৫% শিশু ১১ বছর বয়সের আগেই ডিজিটাল বিশ্বে প্রবেশ করে।যাদের মধ্যে ৩২ শতাংশ শিশু অনলাইনে হয়রানি, সহিংসতা, ভয়ভীতি ও নিগ্রহের শিকার হয় (০৬.০২.২০১৯, দৈনিক প্রথম আলো)। জরিপটি ১২৮১ শিশুর উপর চালানো হয়। জরিপে আরো দেখা গেছে ৯৪ শতাংশেরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট আছে, ৬৩% শিশু নিজের ঘরে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করে, ফলে তাদের ওপর অভিভাবকদের নজরদারি কম থাকে। জরিপ থেকে আরো জানা গেছে, ১৪ শতাংশ শিশু ইন্টারনেটে পরিচয় বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করেছে, ১৭ শতাংশ শিশু অপরিচিতদের সাথে ভিডিওতে কথা বলেছে, ১১ শতাংশ শিশু তাদের ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে বন্ধুদের জানিয়েছে, ১৬ শতাংশ শিশুর অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হয়েছে এবং ৯ শতাংশ শিশু কোনো না কোনো সময় ধর্মীয় উসকানিমূলক বার্তা পেয়েছে।

জরিপ থেকে প্রাপ্ত ফলাফল সুখকর নয়, প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিশু অনলাইনে হয়রানি, সহিংসতা, ভয়ভীতি ও নিগ্রহের শিকার হচ্ছে। এটাতো যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো তথ্য। আমি, আমরা, আমাদের সমাজ, আমাদের রাষ্ট্র কিন্তু বিষয়টা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন তেমনটি মনে হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কারণে, না ভাবার কারণে, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের যথেষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে সমাজের অভ্যন্তরে বিশেষত শিশু সমাজের অভ্যন্তরে ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে যা হবে অপূরণীয়। কাজেই বিষয়টি নিয়ে সকলকে ভাবতে হবে এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, ইন্টারনেট অপব্যবহারের এ ভয়াল থাবা থেকে আমাদের প্রিয় শিশু, আমাদের শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা শুধু জরুরীই নয় কর্তব্যও বটে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষক সমাজকে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট অপব্যবহারের হাত থেকে রক্ষা এবং শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর সহযোগীতায় অত্র সংলাপে সভাপতিত্ব করেন অগ্রগতি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সবুর বিশ্বাস এবং সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মাসুম বিল্লাহ সোহাগ।

উক্ত সংলাপে মোট ৩০ জন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)