কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প-২

‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প -২’ অনুমোদনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ সংশ্লিষ্ট সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রোববার (২৩ আগষ্ট) সকালে উত্তরণ ও পানি কমিটি আয়োজিত তালা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, তালা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি মো: ময়নুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, কপোতাক্ষ নদের নাব্যতা বৃদ্ধি ও জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানকল্পে গত ১৮ আগস্ট এক সভায় ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। ৫৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪ বছর মেয়াদী প্রকল্পটির কাজ ২০২০ সালে শুরু হয়ে ২০২৪ সালে শেষ হবে। অনুমোদন প্রকল্পটিতে কপোতাক্ষ অববাহিকায় জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে টিআরএমকে যুক্ত করে কপোতাক্ষ নদ উজান অংশে যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার তাহেরপুর হতে মনিরামপুর উপজেলার চাকলা ব্রীজ পর্যন্ত ৭৫ কিমি. নদী খনন, তীর প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন, নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ ও মেরামত,  নদের দুই তীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত করা সহ নদের সাথে সংযুক্ত খাল খনন করা কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে সরকার কর্তৃক পলি ব্যবস্থাপনা, টাইডাল প্রিজম বৃদ্ধি ও নিষ্কাশন ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৩৫ বছর মেয়াদী জোয়ার-ভাটা নদী ব্যবস্থাপনা (টিআরএম)  কার্যক্রম চালানোর এই উদ্যেগ গ্রহণ করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকাভূক্ত যশোর জেলার চৌগাছা, ঝিকরগাছা, মণিরামপুর, কেশবপুর উপজেলার; খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলা; সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া ও তালা উপজেলা এবং ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার বিশাল অংশের বাড়ীঘর, রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারী-বেসরকারী স্থাপনাসমূহ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ধর্মীয় উপাসনালয়, আবাদী জমি ও ফলজ বাগান ইত্যাদি জলাবদ্ধতার কবল থেকে রক্ষাসহ পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার টেকসই উন্নয়ন হবে। ফলে কৃষি, মৎস্য ও শিল্প উৎপাদন অব্যাহত থাকবে এবং স্থানীয় জনগণের জীবন-জীবিকাও রক্ষা পাবে। এতে স্থানীয় জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার বর্তমান ধারা বজায় রাখা সম্ভব হবে। তাছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন কল্পে ও বাস্তবায়নোত্তর কাজে সমাজের দরিদ্র শ্রেনীর জন্য বিশেষত: দিনমজুর, স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কৃষি উৎপাদন অব্যাহত থাকার ফলে কৃষি ভিত্তিক নানারকম ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে এলাকার জনগণের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বজায় থাকবে।
তিনি আরও বলেন, এ সফলতার পিছনে কপোতাক্ষ অববাহিকার অধিবাসীদের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও পুরোমাত্রায় আবেদন নিবেদনের ইতিহাস রয়েছে। সেই সাথে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বরাবর যুক্ত থেকেছেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে হাঁটাহাটি করেছেন, পক্ষে বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগ ও আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছেন সেজন্য কপোতাক্ষ অবাহিকার মানুষের পক্ষ থেকে উত্তরণ ও পানি কমিটির অভিনন্দন জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এ অঞ্চলে নদী রক্ষা সংক্রান্ত সরকারের এ বৃহৎ প্রকল্পে জনগণের প্রস্তাবিত টিআরএম প্রযুক্তিকে অন্তর্ভূক্ত করার মাধ্যম বিডিপি-২১০০ বাস্তবায়নে আলোর মুখ দেখছেন বলে উপকূলবাসী মনে করছে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেতে ধীরগতি ও সময়ক্ষেপন করলে নদীর অকাল মৃত্যু ত্বরান্বিত হবে এবং টিআরএম বিলে পলি ভরাটের ক্ষেত্রে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে বিভিন্নভাবে এলাকার জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাছাড়া কপোতাক্ষ নদের সাথে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। এ অববাহিকার বিগত দিনের ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করে অনুমোদিত প্রকল্প বাস্তবায়নে যেন কালক্ষেপন না হয়। পুনরায় যাতে জলাবদ্ধতা হয়ে দূর্বিসহ জীবন-যাপন করতে না হয়। এ জন্য এলাকাবসীর পক্ষে উত্তরণ ও পানি কমিটি সাংবাদিকদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ সহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে অতি দ্রুত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে কাজ শুরু করার জন্য আহবান জানান।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)