জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান শামছুদ্দীন আল মাসুদ বাবুসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষনের চেষ্টা ও মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সম্প্রতি উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামের আব্দুর রশীদ গাজির মেয়ে বেবী আক্তার বাদী হয়ে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তা তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কলারোয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন, উপজেলার মানিকনগর গ্রামের আজিবর রহমানের ছেলে আমিরুল ইসলাম (৩৫), একই গ্রামের বাবু সানার ছেলে আবু তালেব (৫০), কাদের গাজির ছেলে মুস্তাজুল (৩০), বিলাত মোড়লের ছেলে শাহিনুর (৩২) ও মানিহার গাজির ছেলে আলম গাজি(৩৫)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদিনীরা ৬ বোন। দুই বোনের বিবাহ হয়ে যাওয়ায় তারা ৪ বোন পিতার বাড়িতে থাকেন। তবে দীর্ঘ ১৮ বছর পর তার পিতা মালায়েশিয়া থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে দেশে ফিরে আসেন। বাদিনীর কোন ভাই না থাকায় এবং পিতা বাড়িতে না থাকার সুযোগে ১ নং আসামী ইউপি চেয়ারম্যান বাবু ও ২ নং আসামী মানিকনগর গ্রামের আজিবর রহমানের ছেলে আমিরুল ইসলাম বিভিন্ন সময় বাদিনী ও তার বোনদের কু-প্রস্তাব দিত। কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ১নং আসামী বাদিনীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তার এবং তার বোনদের যে কোন উপায়ে ক্ষতি করার হুমকী-দামকী দেয়। এক পর্যায়ে গত ১৭ জুন রাত ৮ টার দিকে ১ ও ২নং আসামীসহ অন্য আসামীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মারাত্মক অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করে তার পিতাকে নাম ধরে ডাক দেয়। এরপর বাদিনী বারান্দার দরজা খুলে দেওয়ার সাথে সাথে ১ নং আসামী বারান্দায় উঠে বাদিনীকে জাপটে ধরে তার শয়ন কক্ষে নিয়ে জোর পূর্বক তার জামা-কাপড় ছিড়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষনের চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে অন্য বোনেরা ছুটে আসলে ২ নং আসামী আমিরুল এ মামলার স্বাক্ষী ইয়াসমিনকে জোর পূর্বক জাপটে ধরে তাকেও ধর্ষনের চেষ্টা করে। পরে ১নং আসামী বাবুর ডাকে অন্যান্য আসামীরা ছুটে এসে তাদের হাতে থাকা লোহার রড,বাশেঁর লাঠি দিয়ে তার বোন জ্যেতি, ইয়াসমিন ও ফাতেমা মারপিট করে রক্তাক্ত জখমসহ জামা কাপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানি করে এবং পিতা আব্দুর রশীদকে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় আসামীরা তার বোন ফাতেমার নিকট থেকে ৪০ হাজার টাকা মূল্যের মোবাইল, ইয়াসমিনের গলা থেকে ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করে নিয়ে বীরদর্পে চলে যাওয়ার সময় এ ঘটনায় মামলা করলে জীবন নাশের হুমকী দিয়েও চলে যায়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা কলারোয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শেখ ফারুক হোসেন জানান, বিজ্ঞ আদালত আমাকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সে মোতাবেক আগামী বুধবার বাদিনী ও আসামী পক্ষদেরকে আমার কার্যালয়ে আসার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। ওই দিন উভয় পক্ষের শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেন পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।