পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিহতের ঘটনার তদন্ত শুরু

মেরিন ড্রাইভের কক্সবাজারের টেকনাফের শামলাপুর অংশে পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা রাশেদ খান নিহতের ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটি তদন্ত কাজ শুরু করেছে। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) সকালে তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান কক্সবাজারে পৌঁছে বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে এক সমন্বয় সভার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেন। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, দুঃখজনক ঘটনাটির একটি নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্ত করা হবে। তবে তদন্ত কমিটি কিভাবে, কী এগিয়ে নেবে সেসব বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে পুনর্গঠিত এই তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এই কমিটিতে রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজারের এরিয়া কমান্ডারের মনোনীত একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে রয়েছে। পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছে চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শকের মনোনীত অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জাকির হোসেন।

শুক্রবার (৩১ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ওই ঘটনার পর প্রথমে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাহজাহান আলিকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হলেও পরবর্তী সময়ে তা পুনর্গঠন করা হয়।

২ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পুনর্গঠন করা কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে। কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একজন প্রতিনিধি, রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজারের এরিয়া কমান্ডারের একজন প্রতিনিধি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির একজন প্রতিনিধি ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। কমিটিকে সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার কারণ, উৎস অনুসন্ধান এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে তার করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট মতামত দিতে বলা হয়েছে।

ওই ঘটনার পর ২ আগস্ট কক্সবাজারে আসেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক ও অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. জাকির হোসেন। সোমবার বিকেলে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে টেকনাফ পরিদর্শন করেন ডিআইজি। কিন্তু ঘটনার বিষয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে কিছুই বলেননি।

এদিকে ২ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন তার নিজ বাসভবনে ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টা নিয়ে যেহেতু তদন্ত চলছে, সেহেতু তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। তবে তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)