চিকিৎসকের অবহেলায় নারী ক্রিকেটের প্রথম কোচের মৃত্যু
যশোরে চিকিৎসকের অবহেলায় নারী ক্রিকেটের প্রথম কোচ সুরাইয়া জান্নাতি তিন্নির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে তিনি শহরের ল্যাবজোন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সেখানে সিজারিয়ান অপারশেনে তিনি সন্তান জন্ম দেন। পরিবারের অভিযোগ, বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের অবহেলায় তিন্নির মৃত্যু হয়েছে।
সুরাইয়া জান্নাতি তিন্নি যশোর শহরের চুড়িপট্টি এলাকার শেখ সাজ্জাদ হোসেন এ্যানির স্ত্রী।
তিন্নির চাচাতো ভাই যবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতা আফিকুর রহমান অয়ন বলেন, গত ২৯ জুলাই ল্যাবজোন হাসপাতালে ডা. নিলুফার ইয়াসমিন এমিলি সিজারিয়ান অপারেশ করে তিন্নির সন্তান প্রসব করান। এরপর সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পরিবারের লোকজন রোগীর অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসককে অবহিত করেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। উল্টো রোগীর স্বজনদের উপর বিরক্ত হন।
৩১ জুলাই সকালে ডা. এমিলি হাসপাতালে আসেন। তিনি দূর থেকে রোগী দেখেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও রোগীর অবস্থার অবনিত ও তাদের সীমাবদ্ধতার কথা স্বজনদের জানায়নি।
সন্ধ্যার দিকে রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে তড়িঘড়ি করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। শ্বাসকষ্ট নিয়ে জেনারেল হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা বাঁচতে পারেননি।
চিকিৎসকেরা ওই সময় জানান, আগেই আইসিইউতে নিতে পারলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হতো।
আফিকুর রহমান অয়ন আরো বলেন, বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের অবহেলায় বোনের মৃত্যু হয়েছে।তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ ব্যাপারে ডা. নিলুফার ইসলাম এমিলি বলেন, রোগীকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমার আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না। আইসিইউতে নেয়ার জন্য রোগীকে খুলনায় রেফার্ড করেছিলাম। স্বজনরা তাকে সেখানে না নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে কেন নিলেন?
রোগীর স্বজনরা ডাক্তারের বিরুদ্ধে বলছেন, স্বজনদের বিরুদ্ধেও তো অভিযোগ থাকতে পারে। তারা তো ডাক্তারের নির্দেশনা মানেন না।
ডা. এমিলি আরো বলেন, ২৯ জুলাই রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। ওইদিন রোগীর প্রেশার বেশি ছিল। মেডিকেল অফিসারকে বলে কিছু ওষুধ দিই।
প্রেশার কম হলে ওই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে সিজারিয়ান অপারেশন করি। মূলত রোগীর প্রি-অ্যাকলেমশিয়া ছিল। অপারেশন ছাড়া উপায় ছিল না। সিজারিয়ানের পর প্রসূতি ও বাচ্চা দুটোই ভালো ছিল।
সময় সময় নিজে রোগীর খোঁজখবর নিয়েছি। শুক্রবার হাসপাতালে গিয়ে আমার চেম্বারে ঢোকার আগে রোগীকে দেখতে গিয়েছি। রোগীর পাশে ১০-১৫ মিনিট বসেছি। শুনেছি কেমন আছেন।
রোগী বলেছেন, তেমন সমস্য নেই। শুধু পেটে কাটার জায়গায় ব্যথা। এরপর কিছু ওষুধ দিয়ে চলে এসেছি। সন্ধ্যায় ফোনে হাসপাতাল থেকে জানানো হয় রোগীর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।
মেডিকেল অফিসারকে বললাম, খুলনায় আইসিইউতে রেফার্ড করে দাও। স্বজনদের জানিয়ে দেয়া হয়। তারা আইসিইউতে না নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়েছেন। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে। খবর শুনে খুব কষ্ট পেয়েছি।