সাতক্ষীরায় মক্ষীরানীসহ আটক কথিত সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংরক্ষণ কমিশনের চেয়ারম্যান

ব্যবসায়ি অহিদ আনামকে জোর পূর্বক এক নারীর সঙ্গে ছবি তুলে ব্লাক মেইলিং করে তাকে পাঁচ দিন আটকে রেখে মোটা অংকের চাঁদা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে সাতক্ষীরার কথিত সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংরক্ষণ কমিশনের চেয়ারম্যান শহিদুলসহ তার মক্ষীরানীকে আটক করেছে পুলিশ। একই সাথে রোববার রাতে শহরের পলাশপোল সরদার পাড়া থেকে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের কাছে এ সময় প্রতারক শহিদুল নিজেকে স্বঘোষিত মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, ভূমিহীন নেতা, ঢাকা থেকে প্রকাশিত দু’টি পত্রিকার মালিক বলে জানান।

আটক প্রতারক চক্রের হোতা শহীদুল ইসলাম কালিগঞ্জ উপজেলার ইউসুফপুর গ্রামের মৃত ইমান আলী গাজীর ছেলে ও তার সহযোগী মক্ষীরানী আফসানা বেগম কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা এলাকার মৃত. কাজী আব্দুল আহাদের কন্যা।

পুুলিশ জানায়, সিরাজগঞ্জের জনৈক অহিদ আনাম সাতক্ষীরায় কাপড়ের ব্যবসা করতেন। শ্যামনগরে এক ব্যবসায়িরর সঙ্গে টাকা লেনদেন নিয়ে তার বিরোধে রয়েছে। এ ঘটনায় শহিদুল গত বুধবার অহিদ আনামকে তার পলাশপোল অফিসে ডেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে। টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় মক্ষীরাণী আফসানাকে দিয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্লাক মেইল করতে তাকে ভাড়া বাসায় আটক রাখে এই প্রতারক। পরে এই ব্যবসায়ীর কাছে দাবি করা হয় মোটা অংকের টাকা। একপর্যায়ে ব্যবসায়ী অহিদ আনাম রোববার ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে তাকে উদ্ধারের জন্য পুলিশকে জানালে সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক শহিদুল ও তার সহযোগী মক্ষীরানী আফসানা বেগমকে আটক করা হয়। একই সাথে উদ্ধার করা হয় ব্যবসায়ী অহিদ আনামকে।

সদরথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অহিদুল আনাম বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে, নিজেকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও কয়েকটি পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিক পরিচয়ে এক সময়ের ভূমিহীন শহীদুল ও তার সহযোগী আফসানা জেলা ও জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে মানুষকে জিম্মি করে ব্যাপক চাঁদাবাজি করে আসছিল বলে এশাধিক সূত্রে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে আইনি সহায়তা দেয়ার নামে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে জোর পূর্বক অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা, মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাদাবীসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। আইনি সহায়তা দেয়ার নামে তার অনৈতিক কর্মকান্ডের শিকার এক নারী কয়েক বছর আগে বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কোন উপায় না পেয়ে ২০১১ সালে তারা ভারতে চলে যেতে বাধ্য হয়। এছাড়া ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন প্রাণসায়ের খালের দু’পাশ থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে পার্ক বানানোর উদ্যোগ নিলে জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা সড়কের ক্ষুদ্র ফার্ণিচার ব্যবসায়িদের হাইকোর্টে রিট করার নামে কয়েক দফায় চার লাখ টাকা নিয়ে আত্নসাৎ করে এই প্রতারক শহিদুল। বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজির জন্য সে পুলিশকে ব্যবহার করতো বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। স্বামীর উপর এসিড নিক্ষেপ মামলার আসামী আফসানাকে নিজের মত করে ব্যবহার করে তার এই প্রতারনার কাজে সে ব্যবহার করে বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে হাজারো অভিযোগ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)