রিকশাচালক থেকে কোটিপতি, প্রতারণায় সাহেদকেও ছাড়াল আমিনুল
এক সময়ে চালাতেন রিকশা। প্রতারণা আর জালিয়াতির মাধ্যমে বর্তমানে কয়েকশ কোটি টাকার মালিক বনেছেন। কয়েক হাজার চেক জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েকশ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছেন শতকোটি টাকা।
বলা হচ্ছে ভাই ভাই ট্রেডার্সের মালিক ও এরশাদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলামের কথা। প্রতারণা করে মানুষ ঠকানোর কৌশলে রিজেন্টের সাহেদকেও ছাড়িয়ে গেছেন এ প্রতারক।
এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান এরশাদ আলী আর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম। ভাই ভাই ট্রেডার্সের মালিকও আমিনুল ইসলাম। এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধেই প্রতারণা ও জালিয়াতির শতাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে আমিনুলের প্রতারণার জাল সারাদেশে বিস্তৃত।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঋণ জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) ঢাকা ও চট্টগ্রামে এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা রয়েছে। তবে জালিয়াতির একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা সত্ত্বেও তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রতারণার জগৎ।
জানা গেছে, সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাথর, বালু ও সিমেন্টের ব্যবসায় প্রতারণার মাধ্যমে শতাধিক ব্যবসায়ীকে পথে বসিয়েছেন আমিনুল। মালামাল বুঝে নিয়ে চেক দিলেও ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গিয়ে দেখা যায় ওই অ্যাকাউন্টে টাকা নেই।
এই প্রতারকের বাংলামোটরের অফিসে মাসের পর মাস ঘুরেও পাওনাদাররা টাকা পাচ্ছেন না। নিরুপায় হয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা চেক জালিয়াতির মামলা করেন। ওই সব মামলায় আমিনুল ছয় মাস জেলও খাটেন। এরপরওএকাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে তার নামে। অভিযোগ রয়েছে, বর্তমানে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আমিনুল।
আমিনুল ইসলামের প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের একজন চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান ‘পদ্মা প্রকৌশলী’র মালিক সাইদুল ইসলাম বাবু। তিনি বলেন, চারটি কাজের জন্য আমিনুলকে এক কোটি টাকা দেই। এখন পর্যন্ত টাকা ফেরত দেয়নি। আদালতে মামলার পর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
এ ব্যবসায়ী আরো বলেন, আমিনুল ইসলামকে ভালো করে চিনতাম না। তার বড় ভাই এরশাদ আলীর বাংলামোটরের কার্যালয়ে গিয়ে ব্যবসার জন্য আমিনুলকে টাকা দেই। এখন শুনেছি এরশাদের বিরুদ্ধেও ব্যাংকের আড়াইশ কোটি টাকা জালিয়াতি করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও আরো নানা মানুষের সঙ্গে আমিনুলের প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশে ২৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই প্রতারক দুই ভাই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচারসহ ঢাকা, রাজশাহী, সাভার ও গাজীপুরে প্লট, ফ্ল্যাট, বাড়ি ও শত শত একর জমি কিনেছেন।
এদিকে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে আমিনুলের কয়েকটি মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। বর্তমানে তার ভাই এরশাদ আলী পালিয়ে বিদেশে চলে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।