শেষ মুহুর্তে জমজমাট পারুলিয়া পশু হাট : ঈদের আগে বসবে আরেকটি হাট
দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। বৈধভাবে আমদানী কার্যক্রম না থাকায় ভারতীয় গরু এবার দখল করতে পারেনি দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ কোরবানির পশুর হাট সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া পশু হাটটিকে। এবছর শুরু থেকেই পশুহাটটি ছিল দেশী গরু ও ছাগলের দখলে।
তবে মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিগত কয়েক সপ্তাহ পশুহাটটিতে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকলেও, ঈদ সন্নিকটে আসায় রোববার পশুহাটে দেখা যায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। শেষ মুহুর্তে কোরবানির পশু বেচাকেনা করতে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদের পদচারনা ও দরদামে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুখরিত ছিলো পশুহাট এলাকা।
এসব ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অধিকাংশরাই এসেছিলেন দেবহাটাসহ সাতক্ষীরা জেলার অভ্যন্তরীন বিভিন্ন উপজেলা থেকে। করোনা ভাইরাসের কারনে অন্যান্য বছরের মতো এবছর সাতক্ষীরার বাইরের জেলাসমুহ থেকে ক্রেতা ও বেপারীরা না আসায় চাহিদা অনুসারে কোরবানির গরু ও ছাগল তুলনামুলোক কম দামে বিক্রি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় খামারী ও ব্যবসায়ীরা।
তবে বাইরের বেপারী ও ক্রেতারা না আসলেও সাতক্ষীরার অভ্যন্তরীন ক্রেতা-বিক্রেতাদের আগমনে শেষ মুহুর্তে জমে ওঠে কোরবানির পশু বেচাকেনা।
এবারের হাটেও গরুর তুলনায় মাঝারি আকারের দেশী জাতের খাসি ছাগল বেশি বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে বিগত কয়েক হাটে অন্যান্য বছরের মতো আশানুরুপভাবে কোরবানির পশু বেচাকেনা না হলেও, শেষ মুহুর্তে অন্তত বেচাকেনা জমে ওঠায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয় খামারী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রেখেই দিনভর বিক্রি হয়েছে কোরবানির পশু।
এবারের পশুহাটে সর্বনিন্ম ৪০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬ লক্ষ টাকা দামের গরু ক্রয় বিক্রয় হতে দেখা গেছে। তবে ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা দামের গরু বেশি বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে স্বল্প বাজেটে কোরবানির ক্ষেত্রে খাসি ছাগল বিক্রি হয়েছে তুলনামূলক বেশি। ৬ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা দামের খাসি ছাগল বেশি বিক্রি হয়েছে।
পারুলিয়া পশুহাটের ইজারাদার ও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য আলহাজ্ব আল ফেরদাউস আলফা জানান, কোরবানির ঈদকে ঘিরে হাটের নিরাপত্তায় স্বেচ্ছাসেবক বাড়ানো হয়েছে। সার্বক্ষনিক সিসি ক্যামেরা চালু রাখা হয়েছে। এছাড়া হাটের বর্তমান পরিবেশ ক্রেতা ও বিক্রেতা বান্ধব আছে। সার্বক্ষনিক দেবহাটা থানা পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা পশুহাটে উপস্থিত ছিলেন। একই সাথে যাতে করে রুগ্ন পশু ক্রয় বিক্রয় না হয় সেজন্য ভেটোরনারি মেডিকেল টিম দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি কেউ প্রতারণার শিকার না হন সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রেখে হাটে কোরবানির পশু ক্রয় বিক্রয় হয়েছে। এছাড়া আগামী শনিবার পবিত্র ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিতের সম্ভাবনা থাকায় রবিবারের হাটটি ঈদের আগে অর্থাৎ বৃহষ্পতিবার বসানোর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।