সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের করোনার থাবায় দেখা দিয়েছে চরম সংকট
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব খাতে থাবা ফেলে মহামারি করোনা ভাইরাস। ফলে রাজস্ব আদায়ের অপার সম্ভাবনাময় এ বন্দরে দেখা দিয়েছে চরম সংকট। দেশের অর্থনীতির খোলা জানালা ভোমরা স্থলবন্দরে চলছে রাজস্ব ঘাটতি। মহামারি করোনার থাবায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় ২০২০-২১ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ১৮৬ কোটি টাকা থেকে নেমে ৫৮৩ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ৬৯২ কোটি টাকা।
জানা গেছে, চলমান প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে ভোমরা স্থলবন্দরে ২০১৯-২০ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক ভারতের সঙ্গে আমদানি বাণিজ্যের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এক হাজার ১৮৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তবে এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫৮৩ কোটি ৩৯ লাখ ৭৫ হাজার ৬৭৯ টাকা। এক্ষেত্রে ঘাটতি হয়েছে ৬০২ কোটি ৯৮ লাখ ২৪ হাজার ৩২১ টাকা।
অবশ্য অর্থবছরের শুরুতেই রাজস্ব আদায় পিছিয়ে ছিল ভোমরা কাস্টমস। চলমান করোনা দুর্যোগের কারণে চলতি অর্থবছরের ২৫ মার্চ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত দীর্ঘ তিন মাস ভোমরা বন্দরে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্থগিত ছিল। ফলে প্রায় ৯০ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা করেছিলেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২০-২১ অর্থবছরে ভোমরা স্থলবন্দরে ভারত থেকে আমদানি পণ্য বাণিজ্যের ওপর এক হাজার দুই কোটি পাঁচ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু চলতি অর্থবছরে ১ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত ২৬ কোটি ৩২ লাখ ৯২ হাজার ৫৯৩ টাকা রাজস্ব অর্জন হয়েছে।
ভোমরা কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা শেখ এনাম হোসেন জানান, করোনা দুর্যোগে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকলে সরকারের বেঁধে দেওয়া রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
তবে ভোমরা বন্দরে বাণিজ্য-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বলছেন, বন্দর ও কাস্টমসের বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, শুল্ক ফাঁকি ও পণ্য খালাসের হয়রানি বেড়ে যাওয়া রাজস্ব ঘাটতির অন্যতম কারণ। বাণিজ্য তদারকিতে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর মধ্যে পরস্পরের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। যে কারণে ব্যবসায়ীরা এ পথ থেকে বাণিজ্যে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এতে সরকার যেমন রাজস্ব আয়ে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি লোকসান গুনছেন ব্যবসায়ীরাও।
ভোমরা স্থলবন্দর কাস্টমস সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারত থেকে আমদানি পণ্যের পরিমাণ ছিল ২৫ লাখ ১৬ হাজার ১৬৭ টন। আর চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত ১৩ লাখ ৩৯৯ টন পণ্য আমদানির ওপর রাজস্ব অর্জিত হয়েছে ২৬ কোটি ৩২ লাখ ৯২ হাজার ৫৯৩ টাকা। এদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবে তিন মাস আমদানি বাণিজ্য বন্ধ মোট ৬৯২ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে।
Please follow and like us: