করোনা ভ্যাকসিন পরীক্ষায় যোদ্ধা হবেন টালিউড তারকারা
কালো মেঘের ফাঁকে আশার রুপালি রেখা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা করোনাইভাইরাসের যে ভ্যাকসিন তৈরি করছেন, তা প্রাথমিকভাবে সফল। ভ্যাকসিনের প্রয়োগে মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে বলেই প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অর্থাৎ, আবারো স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পৃথিবী ফেরার স্বপ্ন দেখছে। আরো আশার কথা, খুব শিগগিরি ভারতেও এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার মানুষের শরীরে শুরু হবে।
ট্রায়ালে কতজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবেন? সাধারণ মানুষের কাছে বিষয়টি সামান্য হলেও হয়তো শঙ্কারও। কারণ, জীবন যে কতখানি মূল্যবান, করোনা সেটা নতুন করে বুঝতে শিখিয়েছে। এর মধ্যে আবার ভ্যাক্সিনের ট্রায়াল? মানুষের ভাবনা খানিক হলেও দ্বিধাগ্রস্ত!
কিন্তু রিল লাইফ যারা হিরো? যিনি কণ্ঠে মারণরোগের থাবাকে হাসতে হাসতে হারিয়ে দেয়ার কথা বলেন কিংবা পর্দায় যারা অনায়াসে অসাধ্যসাধন করেন, সেই সব নায়কেরা কী ভাবছেন? সাধারণ মানুষের মনে সাহস জোগাতে তারা কি নিজেদের উপর ট্রায়াল করতে দেবেন?
নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জুটির ছবির প্রায় সমস্ত চরিত্রের জন্ম বাস্তবের মাটিতে। যেমন ‘কণ্ঠ’-র আরজে অর্জুন। যিনি ক্যান্সারকে হারিয়ে নকল কণ্ঠস্বরে জীবনের বাজি জিতেছেন। সেই ‘অর্জুন’ ওরফে পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা শিবপ্রসাদ করোনার ভ্যাক্সিন নিয়ে বলেন- যতদূর মনে হয়, এই বছরটা লেগে যাবে ভ্যাক্সিন তৈরিতে। এত তাড়াতাড়ি রেজাল্ট পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। বেশি তাড়াহুড়ো বাঞ্ছনীয়ও নয়। সময় নিয়ে, ভাল করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বের করাই ভাল। তবে যদি বেরিয়েই যায় টিকা, এর থেকে ভাল আর কিছু হতেই পারে না। ভ্যাক্সিন বেরোন মানেই অনেকটা ভয় কমে যাওয়া? ভয় ভ্যাক্সিনে কমে না, কমে মনের জোরে। সেই জোর আসে কাজের থেকে। তাই কাজ করে যেতে হবে।
শিবপ্রসাদের মতোই সমান উৎসাহী সাংসদ, অভিনেতা দেব। তিনি বললেন, কেন নয়? দেশের কাজে লাগার সুযোগ কেউ ছাড়ে? এই সুযোগে দশের মঙ্গলে লাগব, এ তো গর্বের কথা।
দেবের আত্মবিশ্বাস ঝরেছে অভিনেত্রী রুক্মিণী মিত্রের কণ্ঠেও, সুযোগ এলে খুব খুশি হব। এবং আমার বিশ্বাস, ভ্যাক্সিন নিয়ে যিনি সুস্থ হবেন তাকে দেখে তখন বাকিরাও উৎসাহিত হবেন। ভ্যাক্সিন নিতে পারবেন চিকিৎসা এবং জরুরি পরিবেষার সঙ্গে যুক্ত সবাই। তারা যদি টিকা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন তাহলে জয় মানবসভ্যতার।
অন্যদিকে, সব ক্ষেত্রেই সবাক অভিনেত্রী মধুমিতা সরকার বললেন, করোনা পজিটিভ ধরা পড়লে আমার উপর হোক টিকার ট্রায়াল। কোনো দ্বিধা নেই আমার।
ভ্যাক্সিনের ট্রায়ালের কথাতে সবার মতোই আশায়, আনন্দে দুলছেন ছোটপর্দার ‘আমন’ পার্নো মিত্রও। এক কথায় মত দিলেন ট্রায়ালেও। বললেন, দেশের জন্য তিনি সব কিছু করতে প্রস্তুত।
সবাই যখন ভ্যাক্সিন এবং ট্রায়াল নিয়ে ইতিবাচক কথা শোনালেন তখন সামান্য ব্যতিক্রমী ‘ইরাবতী’ মনামী ঘোষ। ভ্যাক্সিনের কথা উঠতেই উল্লসিত তিনিও। স্বস্তির আনন্দ তার কথাতেও, ঠিকঠাক কার্যকরী হলে আবার আগের মতো নর্মাল হতে পারব।
তাহলে ট্রায়ালেও নিশ্চয়ই আপত্তি নেই? এবার দ্বিধান্বিত মনামী, জানি না। সেখানে হয়তো একটু ভয় পাব। ভ্যাক্সিনেশন সে সবের থেকে একদম আলাদা, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর সঙ্গে একজন সেলিব্রিটির পাশাপাশি তার পরিবারও জড়িত। তাই চিন্তানা করে এমন কোনো পদক্ষেপ তিনি করতে পারেন না যা ভবিষ্যতে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে সবার।
কাজেই করোনাভাইরাসের এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে যিনিই রাজি হবেন না কেনো তিনিই তো প্রকৃত সেলিব্রেটি। সেটা রুপালী পর্দার তারকারাও হতে পারেন আবার বাহিরের কোনো সাধারণ মানুষ।