ঈদ যাত্রায় অজ্ঞান পার্টির হাত থেকে বাঁচতে ১২ পরামর্শ
আর মাত্র কয়েকদিন ঈদুল আজহা। রাজধানীর অধিকাংশ মানুষই নাড়ির টানে প্রিয় জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে বাড়ি ফিরবেন। আর এই বাড়ি ফেরার পথে অনেকেই পড়েন অযাচিত বিপদে। তার মধ্যে এখন অন্যতম এক আতঙ্কের নাম অজ্ঞান পার্টি। এ পার্টির সদস্যরা সাধারণত ঈদ বা জাতীয় কোনো উৎসবকে কেন্দ্র করে তৎপর হয়ে ওঠে। অজ্ঞান পার্টির প্রধান টার্গেট সাধারণ যাত্রীরা। এ পার্টির সদস্যরা এতটাই ধূর্ত যে তাদের দেখে চেনার উপায় নেই।
বুধবার ঈদ যাত্রায় অজ্ঞান পার্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সচেতনতা মূলক পরামর্শ দিয়েছে।
ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন যানবাহনে এ চক্রের সদস্যরা ছদ্মবেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। টার্গেটকৃত ব্যক্তির সঙ্গে ভাব জমিয়ে যে কোনো খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেয় নেশা জাতীয় ট্যাবলেট। যাত্রী অজ্ঞান হয়ে গেলে সর্বস্ব লুটে নিয়ে সুবিধামত স্থানে সটকে পড়ে। অনেক সময় অজ্ঞানকৃত ব্যক্তির ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে তার নিকট আত্মীয়ের কাছে ফোন করে তাকে আটক রাখার কথা বলে বিকাশ বা অন্য কোনো মাধ্যমে আরো নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ চক্রের সঙ্গে মহিলা সদস্যও রয়েছে। অনেক সময় তারা স্বামী-স্ত্রী সেজে যানবাহনে ওঠে। এরপর টার্গেটকৃত এক বা একাধিক ব্যক্তিকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে ফেলে।
অজ্ঞান পার্টির খপ্পর থেকে বাঁচার পরামর্শসমূহ-
১. ভ্রমণ পথে অযাচিতভাবে অপরিচিত কেউ অহেতুক ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করলে তাকে পাত্তা না দেই। মনে রাখবেন দুষ্ট লোকেরাই মিষ্ট কথা বলে ফাঁন্দে ফেলে।
২. আপনার পাশের সিটের লোকটিই আপনার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতে চাইবে এবং এক সময় নিচের থেকে খাবার (কেক, চিপস, কোমল পানীয়, কাটা পেয়ারা বা আনারস ইত্যাদি) কিনে সেও খাবে আপনাকেও খেতে বলবে। ভুলেও সেই খাবার না খাই।
৩. ফুটপাতে বা রাস্তার মোড়ে টং দোকান থেকে খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকি।
৪. ফেরিওয়ালা বা ভ্রাম্যমান কারো কাছ থেকে আচার, আমড়া, শসা, পেয়ারা প্রভৃতি না খাই।
৫. বাসে, ট্রেনে বা লঞ্চে ভ্রমণের সময় লজেন্স বা চকলেট, আইসক্রিম, সিগারেট জাতীয় কোনো খাবার গ্রহণ না করি।
৬. আজকাল ডাবের ভিতরে আগে থেকেই সিরিঞ্জের মাধ্যমে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো থাকতে পারে। তাই কখন কোথা হতে তৃষ্ণা নিবারণ করছি সে ব্যাপারে সতর্ক থাকি।
৭. প্রয়োজনে যাত্রাপথে হালকা নাস্তার জন্য বাড়ি থেকে সংগৃহীত খাবার বা পানীয় সঙ্গে রাখি অথবা স্থায়ী দোকান থেকে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করি।
৮. সিএনজিতে চলার সময় যাত্রীরা ড্রাইভারের কাছ থেকে এবং ড্রাইভাররা যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকি।
৯. যাত্রাপথে নগদ অর্থ বা যে কোনো মূল্যবান দ্রব্য নিরাপদ হেফাজতে রাখি।
১০. ভ্রমণের সময় পরিচিত কাউকে সঙ্গে রাখার চেষ্টা করি।
১১. যাত্রাপথে পাশের কোনো যাত্রী অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে যানবাহন পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতায় নিকটস্থ হাসপাতালে প্রেরণের ব্যবস্থা করি। আপনার একটু সহযোগিতাই পারে বড় একটা দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে।
১২. যাত্রাপথে কোনো ব্যক্তির আচার ব্যবহার সন্দেহজনক হলে নিকটস্থ পুলিশকে অবহিত করি।