দীর্ঘ তিন মাস পর সক্ষম অক্সফোর্ডের করোনার ভ্যাকসিন

দীর্ঘ তিন মাস ধরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানোর পর মানবদেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম প্রমাণিত হয়েছে অক্সফোর্ডের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন। এর ফলে অনেকটা অবসান ঘটলো প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য বিশ্বের প্রতিটি মানুষের প্রতিক্ষার।

দ্য ল্যানসেটের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, দশজন অংশগ্রহণকারীর একটি সাব-গ্রুপ গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ১ হাজার ৭৭ জনের দেহে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট প্রয়োগ করা হয়। ফলাফলে দেখা গেছে পরীক্ষার ৫৬ দিন পর্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টিবডি উৎপাদন ও টি-সেল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছে। দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পর এই ফল আরো বেশি হতে পারে।

এদিকে গবেষকরা জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনেক বেশি আশাব্যঞ্জক। তবে এখনই তা পর্যাপ্ত সুরক্ষা দেবে কিনা তা বলার সময় হয়নি। কারণ বড় ধরনের পরীক্ষা চলমান রয়েছে।

বিশ্বের দুই শতাধিক ভ্যাকসিন উদ্ভাবন প্রচেষ্টার মধ্যে যে ১৪টি ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে ট্রায়াল করা হয়েছে তাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডার্না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলছে, ভ্যাকসিন তৈরিতে অক্সফোর্ডই সব থেকে এগিয়ে রয়েছে। যুক্তরাজ্য এরইমধ্যে ভ্যাকসিনটির ১০ কোটি ডোজ প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে।

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়েছিল গত এপ্রিল থেকে। প্রথম দু’জনের শরীরে ইনজেক্ট করা হয়েছিল ভ্যাকসিনটি। তাদের মধ্যে একজন নারীবিজ্ঞানী এলিসা গ্রানাটো। পরবর্তীতে প্রথম পর্যায়ে স্বল্প সংখ্যক মানুষের শরীরে পরীক্ষা করা হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ে এক হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবীর দেহে প্রয়োগ করা হয় এই ভ্যাকসিন। এই দুই পর্যায়ের ট্রায়ালের রিপোর্ট ইতিবাচক বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়।

প্রথম দুই ধাপের পরীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কন্ট্রোল গ্রুপের (যাদেরকে ম্যানিনজাইটিস ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে) তুলনায় সার্স-কোভ-২ ভ্যাকসিন সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। তবে প্যারাসিটামল গ্রহণ করে তা কমানো সম্ভব। ভ্যাকসিনের বড় ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)