স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২৮৩ জনের নমুনা সংগ্রহকারী রাশেদ বিল্লাহ’র করোনা শনাক্ত
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব অ্যাসিসট্যান্ট রাশেদ বিল্লাহ (৩৮)। দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকে রাশেদ কাধে তুলে নিয়েছিলেন উপসর্গ বহনকারীদের নমুনা সংগ্রহের মতো এক গুরু দায়িত্ব।
নমুনা সংগ্রহ করতে ভয় ডর উপেক্ষা করে ছুটি বেড়িয়েছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত। সংগ্রহ করেছেন ২৮৩ জনের নমুনা। কিন্তু হঠাৎ এই সম্মুখ যোদ্ধার নমুনা সংগ্রহের কর্মযজ্ঞে ছুটে চলায় ছেদ পড়েছে। গত ৯ জুলাই রাশেদ বিল্লাহ’র নিজেরই করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। আর রোববার (১২ জুলাই) তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা উপসর্গ বহনকারীদের নমুনা সংগ্রহ করে সর্ব মহলে প্রসংশিত রাশেদ বিল্লাহ নিজে নমুনা দেওয়ার দিন থেকেই নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। রাশেদ বিল্লাহ জানান, গত ৬ এপ্রিল থেকে তার নেতৃত্বে সফিকুল ইসলামসহ আরও দুইজন মিলে তারা উপজেলার বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ওমর ফারক চৌধুরী তাদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে সাহস যুগিয়েছেন। শুরুতে বাড়ি বাড়ি যেয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হতো। গত কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে নুমনা সংগ্রহ কার্যক্রম চালু হয়েছে। তারপরও মাঝে মধ্যে বাড়ি বাড়ি যেয়ে নুমনা নিতে হচ্ছে। করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এই সম্মুখযোদ্ধা বলেন, মানুষের জন্য কিছু করার ব্রত নিয়ে শুরু থেকে কাজ করেছি। তাই যতটা সম্ভব সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে রোগাক্রান্ত মানুষের নুমনা সংগ্রহ করে বিবেক, সমাজ সর্বোপরি রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভুগতে থাকা রোগীদের নুমনা সংগ্রহ করে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ইতোমধ্যে এলাকার সকলের প্রিয় পাত্রে পরিণত হওয়া রাশেদ বিল্লাহ নিজ পরিবারসহ তার জন্য দোয়া কামনা করেছেন। তিনি বলেন, রোববার আমার পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। বাড়িতেই আইসোলেশনে আছি। সকলে দোয়া করবেন, যেন সুস্থ হয়ে আবারও মানুষের জন্য কাজ করতে পারি। শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ওমর ফারক বলেন, রাশেদ বিল্লাহ তার টিম নিয়ে যেভাবে মানুষের বাড়ি বাড়ি যেয়ে নুমনা সংগ্রহ করেছে তা সবার পক্ষে সম্ভব ছিল না। রাষ্ট্রের প্রতি তার দায়বোধ প্রশংসনীয়।