আশাশুনিতে ইউনিয়ন ভূমিকর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ
আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান এর বিরুদ্ধে চেক দাখিলা দেওয়ার নামে পানি বন্ধি মানুষের নিকট থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্মস্থলে নিয়মিত না থাকা, মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার করা, টাকা ছাড়া কাজ না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রতিকার প্রার্থনা করে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
দুর্নীতিবাজ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন প্রতাপনগরের পানি বন্ধি অসহায় মানুষ। সরোজমিনে গেলে ভূমি অফিস সংলগ্ন বাজারের বহু মানুষ উপস্থিত হয়ে দুর্নীতিবাজ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ক্ষতিগ্রস্থ আইয়ুব আলী, লুৎফর জোয়ার্দ্দার, মিজান সরদার, বিধান সরকার, আব্দুল বারি, কাজল তরফদার, মিনহাজ গাজী ও শফিকুল ইসলামসহ আরো অনেকের নিকট থেকে চেক দাখিলা দিয়ে সরকারি রাজস্ব বাদে অতিরিক্ত আনুমানিক লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তারা জানান। ঘুর্ণিঝড় আম্পানের ১ মাসের অধিক সময় পার হলেও প্রতাপনগর ইউনিয়ন অদ্যাবধি প্লাবিত হয়ে আছে। মানুষের মাথা গুজার ঠাঁই নাই বললেই চলে। পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য জমি ক্রয় বিক্রয় এর চেক দাখিলা নাম পত্তন করার জন্য ইউনিয়ন সহকারী ভূমিকর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান এর কাছে গেলে তিনি সরলতার সুযোগটি আর হাত ছাড়া না করে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নিকট লক্ষাধিক টাকা চাপিয়ে দিলে কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে উক্ত ভূমি অফিসের নামধারী দালালের সহযোগিতায় ভূমি কর্মকর্তা বহায় তবিয়তে দুর্নীতি করে চলেছেন। বাধ্য হয়ে তাদের দাবী মেনে নিয়ে চেক দাখিলা গ্রহণ করতে হয়েছে বলে তারা জানান। এছাড়া এলাকায় অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের ব্যাপারে ইউএনও মহোদয়কে খবর না দিয়ে আর্থিক সহযোগিতা গ্রহন, ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর দেওয়ার তালিকাভুক্ত করার নামে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন এলাকার ভুক্তভোগিরা। গত ৩০ জুন উক্ত তহশীলদার তার বরাবরের অনিয়মের মত অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। আর্থিক বছরের শেষ দিনে যেখানে হিসাব নিকাশ ও কর আদায়ের ব্যাপারে অনেক কিছু করনীয় থাকে, সেখানে বিনা ছুটিতে তিনি কমূস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এমনকি মোবাইলে কথা বলতে চাইলেও তিনি রিসিভ করেননি। দাখিলা কাটতে কিংবা অফিসের জরুরী কাজে আসা অনেকে ফিরে যেতে বাধ্য হন। অফিসে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার মোবাইলে নিজেরা ও অফিসের কর্মচারীদের দিয়ে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তৎক্ষণাৎ উপজেলা ভূমি অফিসের বড়বাবুর কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি জানান, কোন লিখিত ছুটির আবেদন তিনি করেননি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন সুলতানার কাছে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি (ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা) ছুটি নেননি। তবে একটু দেরিতে অফিসে যাবেন বলে অনুমতি নিয়েছিল বলে তিনি জানান। কিন্তু না সারা দিনই তিনি অফিসে পৌছেননি। পরবর্তীতে মোবাইলে তার সাথে কথা হলে তিনি বিশেষ কারণে অফিসে যেতে পারেননি বলে জানান এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন। এব্যাপারে আশাশুনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন সুলতানার নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাকিদের বলেন, এমন কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। যদি এমন কিছু অনিয়ম হয়ে থাকে, প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।