শ্যামনগরে ভূমিদস্যুদের দখলে পানি বন্দি হয়ে আছে দুই হাজারের ও বেশী পরিবার
টানা বৃষ্টির মধ্যে সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের হিমখালী ও পোলের খাল সহ অনেকগুলো সরকারি খাস খাল ভূমি দস্যুদের দখলে। রমজাননগর মৌজার এস,এ ২৫৬৭,২৫৬৮,২৫৭২,২৫৭৬,২৫৮২ দাগে পোলের খাল ও হীমখালী খাস খালে আড়া আড়ি বাঁধ দিয়ে রেখেছে ভূমিদস্যুরা।
দুই হাজারের ও বেশী পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সরজমিনে দেখা গেছে যে, রমজাননগর মৌজায় ও ভেটখালী মৌজায় এস,এ ১নং খাস খতিয়ানের ২টি খাল যা হিমখালী ও পোলের খালটি স্থানীয় ভূমিদস্যুরা দখল করে নিয়েছে। গরীব অসহায় গ্রামবাসীর কাচাঁ ঘরবাড়ী পানিতে ঢুবে ভেঙ্গে যাচ্ছে, পুকুর ডুবে লাখ লাখ টাকার মৎস্য ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, সেই সাথে গাছ পালা উপড়ে পড়ছে, রাস্তাঘাট ভেঙ্গে একাকার হয়ে যাচ্ছে, ধান্য ফসলাদি ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে ভেটখালী সহ পার্শ্ববর্তি গ্রামগুলো পানি নিস্কাশনের অভাবে ডুবে মানুষের চরম বিপর্যরে স্মূখিন হতে হয়। রমজাননগরের শত শত বিঘা ধান্য জমি ফসলের অনউপযোগী হয়ে কৃষকের প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হয়। এই বিষয়ে ঐ জমির কয়েক জন মালিক জানান যে, আমাদের এই জমিতে দুই ফসল ধান্য চাষ করার উপযোগী কিন্তু পানি নিস্কাশনের অভাবে সময় মত চাষ করা যায় না আর করলেও পানিতে ডুবে প্রতি বছর ব্যাপক লোকশান খেতে হয়। নির্দিষ্ট কোন পানি নিস্কাশনের পথ না থাকায় প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে এই দূর্ভোগে পড়তে হয়। স্থানীয় প্রভাশালী অসাধু ধনাট্য কিছু কতিপয় ব্যক্তিরা গায়ের জোরে ভেটখালী সহ পার্শ্ববর্তি গ্রামগুলোর পানি নিস্কাশনের ঐ একমাত্র খাল দুটি দখল করে আড়া আড়ি পুকুর কেটে রেখেছে। উক্ত খালটি গত ২০১৪ সাল থেকে নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে দখলদারদের গোলোযোগ সৃষ্টি হয়ে আসছে ।
এলাকার কিছু অর্থলোভী ব্যক্তিরা আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে খালটি দখল করে রাখলেও নেই কোন তার প্রতিকার। স্থানীয় প্রশাসনের নিরাবতা পালনে এলাকার একজন সমাজসেবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ দ্বায়ের করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভূমি সহকারি কর্মকর্তার নিকট প্রদান করেন। পরে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কৈখালী নায়েব সুধীন কুমারের নিকট পাঠালে তদন্ত করে সত্যতা প্রমান মেলে। ভূমিদস্যুদের দখলে এমন ধরনের প্রতিবেদন দাখিল করে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা। এখন সত্যতা পেয়েও খাল গুলো উন্মুক্ত করার নেই কোন তোড়জোড়।
পুনরায় বিষয়টি নিয়ে উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তার নিকট জানালে তিনি বলেন, জলবর্দ্ধতা নিরাসনে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অঙ্গিকার করেছেন যে, ভূমিদস্যুদের দখল থেকে সকল খাস খাল উন্মুক্ত করবেন। তারই প্রেক্ষিতে রমজাননগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আল-মামুনের নিকট আগামী ৩ দিনের মধ্যে খাস খাল উন্মুক্ত করে পৌনরায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি নোটিস প্রেরন করেন। কিন্তু গত ১ সপ্তাহে এর কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
চেয়ারম্যান শেখ আল-মামুন বলেন, খালটির আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে রেখেছে। দীর্ঘদিন দখলের ফলে বাঁধের উপর বড় বড় গাছ গড়ে উঠেছে। এখন উপজেলা কর্মকর্তারা ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সম্ভব না। আমি প্রতিবেদন লিখে উপজেলায় পাঠিয়ে দেবো।
তবে সচেতন মহলের মধ্যে বিভিন্ন মন্তব্য শুরু হয়েছে। প্রশাসন কি সরকারী খাস খাল উন্মুক্ত করবে না ? বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি আর্কষন করছেন।