কালিগঞ্জে কাবিখার গম কালো বাজারে পাচারের অভিযোগে তিন আসামীর জামিন না মঞ্জুর
সরকারের কাবিখা প্রকল্পের ৪৮ টন গম কালো বাজারে পাচারের অভিযোগে কালিগঞ্জ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় তিন আসামীর জামিন না মঞ্জুর করা হয়েছে। গত বৃহষ্পতিবার ও রোববার সাতক্ষীরার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান তাদের জামন না’মঞ্জুর করেন।
২৮ মে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে মনি মুক্তা চালের মিল থেকে ৮১৭ বস্তা গম উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত তিনজনের জামিন না’মঞ্জুর করা হয়েছে।
জামিন না’মঞ্জুর হওয়া আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি ইউপি সদস্য পরানপুর গ্রামের উপেন্দ্রনাথ মণ্ডলের ছেলে পবিত্র মণ্ডল, কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্বনলতা শানপুকুর গ্রামের আব্দুল গফফারের ছেলে মনিরউজ্জামান ও দেবহাটা উপজেলার আস্কারপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে মোজাহিদুল আলম মুকুল।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় গত ২৭ মে রাতে কালিগঞ্জ থানার পুলিশ কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন পূর্ব নলতার আব্দুল গফফারের ভাড়া নেওয়া মনিমুক্তা এন্টারপ্রাইজ থেকে ৮১৭ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি) গম উদ্ধার করে। যার মোট ওজন ৪৭ টন ৮৫০ কেজি। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, শ্যামনগরের কৈখালি ইউপি সদস্য পবিত্র কুমার মণ্ডল কাবিখা প্রকল্পের কাজ ২৩ টন চাল বিক্রি করে সুমি এন্টারপ্রাইজের মালিক মোজাফফর রহমানের কাছে বিক্রি করে।
মোজাফফর ওই গম কালিগঞ্জের পূর্ব নলতার মনিমুক্তা এন্টারপ্রাইজের মালিক ভাড়াসিমলার সুলতানপুরের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন ভাড়া নেওয়া ওই রাইস মিল থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া বাকী গমের মালিক কারা তাদেরকে সনাক্ত করার চেষ্টা করা হয়। ২৮ মে গ্রেপ্তারকৃত পবিত্র মণ্ডল, মনিরুজ্জামান ও মোজাহিদুলকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার তদন্তে নেমে খুলনা দূর্ণীতি দমন সমন্বিত কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তদন্তে নামেন। ওই দিন দু’দকের উপপরিচালক নীল কোমল পাল বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃত তিনজনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে কালিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ৩১ মে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নীল কোমল পাল ৫৪ ধারায় গ্রপ্তারকৃত তিনজনকে তার দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন। ভার্চুয়াল আদালতে ৮ জুন সাতক্ষীরার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুল ইসলাম ওই তিনজনকে দুদকের মামলা গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন। একইসাথে মোট গম থেকে পাঁচ কেজি আলামত থেকে আমপান দুর্গত সাতক্ষীরার ছয়টি ইউনিয়নের জনগনের মাঝে বন্টনের নির্দেশ দেন।
এদিকে রোববার ভার্চুয়াল আদালতে পবিত্র কুমার মণ্ডল, গত বৃহষ্পতিবার মনিরুজ্জামান ও মোজাহিদুল আলম মুকুলের জামিন আবেদন করেন যথাক্রম অ্যাড. এসএম হায়দার আলী ও অ্যাড. এম শাহ আলম। শুনানী শেষে তাদের জামিন না’মঞ্জুর করেন বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক নীল কোমল পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।