খুলনায় চিকিৎসক হত্যায় গ্রেফতার ৫
খুলনার রাইসা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রকিব খানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ডা. রকিব হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি জমির, আবুল আলী, গোলাম মোস্তফা, খাদিজাকে গাজীপুরের টঙ্গী ও খুলনার রূপসা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাতের বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে আবদুর রহিম নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এ নিয়ে এজাহারভুক্ত চার আসামির মধ্যে তিনজন গ্রেফতার হলো।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির এসব তথ্য জানান।
বুধবার দুপুরে নিহতের ছোট ভাই খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়।
নগরীর মোহাম্মদ নগরের পল্লবী সড়কের বাসিন্দা আবুল আলীর স্ত্রী শিউলী বেগমকে গত ১৪ জুন সিজারের জন্য রাইসা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকেল ৫টায় অপারেশন হয়। বাচ্চা ও মা প্রথমে সুস্থ ছিলেন। পরে রোগীর রক্তক্ষরণ হলে ১৫ জুন সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানের চিকিৎসকরাও রোগী রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে ঢাকায় রেফার্ড করে। ঢাকায় নেয়ার পথে ১৫ জুন রাতে শিউলী বেগম মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত রোগীর স্বজনরা ১৫ জুন রাত ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ডা. রকিবকে লাথি ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার মাথার পেছনে জখম হয়। তাকে প্রথমে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে শেখ আবু নাসের হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে ১৬ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গ্রেফতারদের মধ্যে মৃত রোগী শিউলী বেগমের ভাই জমির, স্বামী আবুল আলী, ভাবি খাদিজা ও চাচা গোলাম মোস্তফা রয়েছেন।
খুলনায় সব সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসদের কর্ম বিরতি চলছে। রাইসা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রকিব খান হত্যার ঘটনায় সব আসামি ধরা পড়াসহ বেশ কিছু দাবিতে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) ডাকে এ কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। তবে এর আওতার বাইরে রয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ও করোনা হাসপাতাল।
বুধবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া চিকিৎসকদের কর্ম বিরতির কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে চরম দুর্ভোগে পরেছেন। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক এমনকি চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও তার স্বজনরা।