বন্যপ্রাণীর ব্যবসা ছেড়ে দিলে নগদ টাকা দেবে চীন
চীন সরকার ফেব্রুয়ারিতে বন্যপ্রাণীর বাণিজ্য নিষিদ্ধ করে। তারপরও বন্ধ হয়নি বিষাক্ত বন্যপ্রাণী প্রজনন করা। এবার সেটা রুখতে প্রজননকারী কৃষকদের নগদ অর্থ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির সরকার। যাতে বিষাক্ত বন্যপ্রাণীর বাণিজ্য ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়।
দেশটির প্রাণী অধিকার সংরক্ষণ কর্মীরা জানাচ্ছেন, বিদেশি প্রাণীর প্রজনন বন্ধে এই প্রথম চীনা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের প্রতিশ্রুতি দিল।
সংবাদ সংস্থা এএফপির তথ্যানুযায়ী, বন্যপ্রাণীর প্রজনন ও বাণিজ্য রুখতে বিভিন্ন প্রদেশ বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশটি। এরইমধ্যে হুনান প্রদেশ প্রজননকারীদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। তারা অন্য কোনো প্রাণীর চাষে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছে। চা চাষ ও হার্বাল ওষুধ তৈরিতে উৎসাহিত করছে।
হুনান প্রদেশ প্রজননকারীদের প্রতি কেজি কোবরা, কিং র্যাটেলস্নেক, র্যাট স্নেকের জন্য ১২০ ইউয়ান (১৩৬০ টাকা) ও প্রতি কেজি বাঁদুরের জন্য ৭৫ ইউয়ান (৯০০ টাকা) দেয়া হচ্ছে। আর সার্সভাইরাস ছড়ানো খাটাশের জন্য দেওয়া হচ্ছে ৮০০ ইউয়ান (প্রায় ১০ হাজার টাকা)।
পার্শ্ববর্তী জিয়াংশি প্রদেশ কৃষকদের বলেছে প্রজনন করা সব প্রাণী মাটিচাপা দিতে এবং সেটার প্রমাণ দেখিয়ে আর্থিক সহায়তা নিতে। প্রদেশটিতে নিবন্ধিত ২ হাজার ৩০০ জন প্রজননকারী রয়েছে। তাদের অধিকাংশ বন্যপ্রাণীর খাবার উৎপাদন করে। তাদের কাছে যে পরিমাণ বন্যপ্রাণী রয়েছে সেগুলোর মূল্য ১.৬ বিলিয়ন ইউয়ান।
এই দুটি প্রদেশই করোনাভাইরাসের আতুরঘর হুবেই প্রদেশের সঙ্গে লাগোয়া। তবে হুনান ও জিয়াংশি প্রদেশ দুটি বন্যপ্রাণীর প্রজননের জন্য বিখ্যাত। ২০১৮ সালে জিয়াংশ প্রদেশ প্রাণীর প্রজনন করে ১০ বিলিয়ন ইউয়ান লাভ করেছিল।
চলতি মাসের শুরুতে চীন খাদ্য হিসেবে বন্যপ্রাণী বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। যাতে করোনাভাইরাসের মতো অন্যান্য ভাইরাস এসব প্রাণী থেকে ছড়িয়ে পড়তে না পারে। তবে গবেষণা ও ঔষুধি কাজের উদ্দেশ্যে বেচা-কেনা করা যাবে।
ধারণা করা হয়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের বন্যপ্রাণীর বাজার থেকেই ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। এরপর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এটি।