ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বন্ধ: বুধহাটায় শত বছরের সেই বট গাছ কাটতে আবারো ষড়যন্ত্র

আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা-ব্যাংদহা রাস্তার মুখে শতাধিক বছর ধরে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বটগাছটি কেটে ফেলতে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। গাছটিকে ক্রমে ক্রমে উচ্ছেদ করতে গভীর ষড়যন্ত্র ও কৌশলী হয়ে লক্ষাধিক টাকার বাজেট নিয়ে মাঠে নেমেছেন ষড়যন্ত্রকারীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, কয়েক বছর আগে সাতক্ষীরা আশাশুনি সড়কের ব্যাংদহা রাস্তার মুখে অবস্থিত এই বটগাছের নিচে কয়েক শতক জমি ক্রয় করেন, আলহাজ্ব গফুর সরদার। তিনি জমি কেনার পর থেকে বিভিন্নভাবে এ বটগাছটি কাটার জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছিলেন। সে সময় গাছ কেটে নিতে বিশেষ করে কিছু অংশ কেটে জায়গাকে ঘর বানানোর জন্য উপযোগি করতে উদ্যোগ নেন তিনি। এসময় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহন করায় ষড়যন্ত্র থমকে গিয়েছিল। এরপর থেকে বটগাছটি কাটার ব্যাপকভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছিল। সে সময় হঠাৎ করে গাছের কয়েকটি বড় ডাল ভেঙ্গে পড়েছিল। অনেকের ধারনা, ডাল স্বাভাবিক কারণে ভেঙ্গে পড়েনি, বরং গোপনে ডালের অংশ বিশেষ কৌশলে নষ্ট করা হয়েছিল, ফলশ্রুতিতে ডাল ভেঙ্গে পড়েছিল। কিন্তু পুরা গাছটি মারা ও নষ্ট করা যায়নি। আবারও করোনা ভাইরাস ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের দিকে সবাই যখন ব্যস্ত, তখন ষড়যন্ত্র ও কুটকৌশল অবলম্বন করে বড় অংকের বাজেট নিয়ে মাঠে নেমেছে ষড়যন্ত্রকারীরা। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ভোর রাতে গাছের ডাল কাটা শুরু করে কয়েকজন শ্রমিক। পথচারিরা শ্রমিককে গাছের কয়েকটা মোটা ডাল কাটতে দেখে তাদের বাধাঁ দেয়। ততক্ষণে তাদের রক্ষার্থে এগিয়ে আসে কিছু ব্যক্তি। সাংবাদিকরা ও সচেতন কেউ কেউ গাছ কাটার পারমিশন দেখতে চাইলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। তবে গাছ কাটতে আসা শ্রমিকরা জানান, তারা ধুলিহর থেকে এসেছে, ঠিকাদার আব্দুস ছালাম তাদেরকে পাঠিয়েছেন, জেলা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে গাছ কাটার জন্য। প্রাথমিক ভাবে সাংবাদিকরা জেলা পরিষদে খোজ নিয়ে জানতে পারেন, জেলা পরিষদ কাউকে গাছ কাটার অনুমতি দেয়নি।

বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার অবহিত হয়ে বুধহাটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোকাররম হোসেনকে ঘটনাস্থানে পাঠান । তিনি ঘটনাস্থলে পৌছে গাছের ডাল কাটা বন্ধ করে সেগুলোকে জব্দ করেন। এ ব্যাপারে বুধহাটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জানান, আমি বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে গাছের ডাল কাটা বন্ধ করে দিয়েছি এবং কর্তন করা ডালগুলোকে জব্দ করেছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি। কিভাবে সরকারি গাছ একজন ঠিকাদার কাটাতে শ্রমিক পাঠালেন এবং কেন আঃ গফুরের পক্ষের লোকজন তাদেরকে সাপোর্ট দিয়ে অবৈধ কাজে বাধা দানকারীদেরকে চেপে দেওয়ার কর্ম করলো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এলাকাবাসী উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)