দেশে করোনা চিকিৎসায় দুই চিকিৎসক দিলেন প্লাজমা
দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রথম প্লাজমা (রক্তরস) দিয়েছেন করোনাজয়ী দুই চিকিৎসক।
শনিবার ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনে প্লাজমা সংগ্রহের উদ্বোধনের পর রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগে ওই দুই চিকিৎসক প্লাজমা দান করেন।
এরা হলেন- শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. দিলদার হোসেন বাদল ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ডা. রওনক জামিল পিয়াস।
এর আগে গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমকে প্লাজমা-সংক্রান্ত সরকারি কারিগরি উপ-কমিটির প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ খান বলেন, আপাতত ঢাকা মেডিকেলের নিজস্ব খরচে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে প্লাজমা সংগ্রহ শুরু করা হলেও বড় আকারে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করতে গেলে সরকারের সহায়তা লাগবে। দাতার শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহের জন্য একটি বিশেষ কিট প্রয়োজন হয়। এ ধরনের প্রতিটি কিটের দাম ১২ হাজার টাকা।
তিনি আরো জানান, পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বলে রোগীকে প্লাজমা থেরাপি দেয়ার পর আরো কিছু পরীক্ষা করাতে হয়। কিছু পরীক্ষা ঢাকা মেডিকেলে হয়, কিছু পরীক্ষা বাইরে করাতে হবে।
ডা. এম এ খান জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যে কোভিড-১৯ রোগীরা আছেন তাদের ওপরই আপাতত এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। এছাড়া ঢাকার আরো দুয়েকটা হাসপাতালে রোগীদের ওপর প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, রক্তের জলীয় অংশকে প্লাজমা বলা হয়। রক্তের তিন প্রকারের কণিকা বাদ দিলে বাকী অংশ হচ্ছে রক্তরস। কোনো মেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরের রক্তের প্রায় ৫৫ শতাংশই হলো রক্তরস। সেরে ওঠা ব্যক্তির রক্তরস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দিয়ে চিকিৎসা দেয়ার এ প্রাচীন পদ্ধতি প্লাজমা থেরাপি নামে পরিচিত। করোনাভাইরাস চিকিৎসায়ও এই পদ্ধতি বিশ্বজুড়ে ভালো ফলাফল দেয়ায় বাংলাদেশেও এটির যাত্রা শুরু হলো।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা জানান, সুস্থ হওয়া একজনের প্লাজমায় চিকিৎসা দেয়া যাবে তিনজন করোনা রোগীকে। এটির মাধ্যমে বাড়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা, কমে মৃত্যু ঝুঁকি।
চিকিৎসকরা বলছেন, প্লাজমা দান ও থেরাপিতে সাধারণ মানুষকে সচেতন ও উৎসাহী করতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন তৈরি করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্লাজমা থেরাপি কার্যকর ভূমিকা রাখলে কমে আসবে করোনায় মৃত্যুহার।