কলারোয়ায় মেধাবী ছাত্র তুষার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পিতার সংবাদ সম্মেলন

আমার ছেলের খুনিরা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। স্বাক্ষীরা ও নিরপত্তাহীনতায়। আমি আমার ছেলের খুনিদের অতিদ্রুত গ্রেপ্তার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান, কলারোয়া উপজেলার পাইক পাড়া গ্রামের নিহত কলেজ ছাত্র তুষারের পিতা বজলুর রহমান শেখ।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আমার ছোট ছেলে মো: তুষার হোসেন জনি (২১) ঢাকা পলিটেকনিক ইনিসটিটিউটের ২য় বর্ষের ছাত্র। করোনা ভাইরাসের কারনে কলেজ ছুটি থাকায় গত ১৮ মার্চ সে বাড়িতে আসে। পার্শ্ববর্তী আদম ব্যবসায়ী মো: কামরুজ্জামানের মেয়ে সায়মা জামান ময়না খাতুনের সাথে তুষারের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। গত ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে আমার ছেলে তুষার কামরুজ্জামানের মেয়ে ময়নার সাথে মোবাইলে কথা বলছিলো। বিষয়টি ময়নার পিতা কামরুজ্জামান জানতে পারে। এসময় কামরুজ্জামান তার মেয়ে ময়নাকে দিয়ে মোবাইলে আমার ছেলে তুষারকে তাদের বাড়িতে ডেকে নেয়।

তার আগে তুষার শায়েস্তা করতে রিয়াজ উদ্দীন আহম্মেদ’র ছেলে আসামী কামরুজ্জামান, ওহিদুজ্জামান পিন্টু, শহিদুজ্জামান রিন্টু, রহিম বকস দফাদারের ছেলে মো: আব্দুল জলিল, জলিলের ছেলে সোহাগ হোসেন, মৃত মতলেব দফাদারের ছেলে রিয়াজ উদ্দীন দফাদার, আব্দুল মান্নান দালালের ছেলে টাইফুন গোলাপ গাইনের ছেলে শাহিন, ওজিয়ার দালালের ছেলে কবির, কামরুজ্জামানের স্ত্রী আসমা খাতুনসহ ৫/৬ জন বাড়ির পাশে অবস্থান নেয়।

আমার ছেলে জনি তাদের বাড়ির পাশে যাওয়ার সাথে সাথেই তারা সংঘবদ্ধ হয়ে রড, রামদা, ছুরি, হকিষ্টিক ও কাঁচের বোতল দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। সে দৌড়ায়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে পার্শ্ববর্তী মৃত আবুল হোসেন শেখের বাড়ির উঠানে পড়ে যায়। আসামীরা মারপিট করে মৃত ভেবে ফেলে যাওয়ার পর তাকে উদ্ধার করে আমার মামাত ভাই বিল্লাল ফকির গ্রাম যুগীখালী এর বাড়িতে রেখে আসে। পরে জানতে পেরে আমি আমার ছেলে জনিকে প্রথমে কলারোয়া ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে পথিমধ্যে সে মারা যায়।

আসামী কামরুজ্জামান সর্বজন স্বীকৃত এক জন আদম দালাল, খুনি ও নারী লোভী। ইতি পূর্বে কামরুজ্জামান,পিন্টু, রিন্টু,তার ছোট বোন সাজিদা খাতুন কে খুন করে। জলিল ও রিয়াজ উদ্দীন সাজিদা খাতুনকে ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রাখে। এই খুনী কামরুজ্জামানের স্ত্রী থাকা সত্বেও স্ত্রীর আপন বোনকে অবৈধ প্রেমে জড়িয়ে গর্ভবতী করে চাপে পড়ে তাকে বিয়ে করে। পরে তাদের একটি কণ্যা সন্তানও আছে। আসামী পিন্টুর স্ত্রী থাকা সত্বেও যুগীখালী গ্রামের আমজেদ দালালের মেয়েকে পরকীয়া করে বিয়ে করে। এছাড়া সোহাগ, টাইফুন, শহিন, করিম গ্রামে সিআইডি সেজে টাকা আদায় করে দীর্ঘদিন হাজত খেটে বর্তমানে জামিনে আছে। উল্লেখিত আসামীরা সবাই দুর্দান্ত প্রকৃতির হওয়ায় তাদের তান্ডবে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ।

উক্ত আসামীরা বিভিন্ন মাধ্যমে মামলা তুলে তিনে হুমকি দিচ্ছে। স্বাক্ষীদেরকেও খুন জখম করার হুমকি দিচ্ছে। তারা এলাকায় এসে ঘোষনা করেছে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে তাদের কিছু হবেনা। আমরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান জানি। তাঁর প্রতি আমাদের অবিচল বিশ্বাস রয়েছে। তিনি এই ধরনের খুনিদের প্রশ্রয় দেবেন না।

এখনো পর্যন্ত আমামীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় বর্তমানে আমি ও আমার পরিবরসহ স্বাক্ষীরা নিরপত্তাহীনতায় আছি। আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আমরা মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রধান মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)