সন্তানের দুধ ও খাদ্য কোয়ারেন্টাইনে থাকা শিশুকে দিলেন ইউএনও সাজিয়া আফরীন
সাতক্ষীরার দেবহাটায় নিজের শিশু সন্তানের জন্য কেনা দুধ ও শিশুখাদ্য সামগ্রী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা দুই শিশুকে উপহার দিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীন।
শনিবার উপজেলার সরকারি খানবাহাদুর আহছানউল্লা কলেজে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টানে থাকা নারায়নগঞ্জ থেকে ফেরা ইটভাটা শ্রমিকসহ ২৪ জনের মধ্যে তাদের ৩-৪ বছর বয়সী দুই শিশুর জন্য বাড়ী থেকে নিজের শিশু সন্তানের জন্য কিনে রাখা দুধ, কলা, খেজুর, মুড়ি, টোস্ট ও বিস্কিটসহ শিশুখাদ্য ও প্রয়োজনীয় স্যানিটাইজার সামগ্রী পৌছে দেন তিনি।প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা ওই দুই শিশু হাসিব বাবু (৩) উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে এবং মুজাহিদ (৪) একই গ্রামের মুসা হোসেনের ছেলে। তাদের পিতা মাতা নারায়নগঞ্জের ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত থাকায় সেখানেই ছিলেন শিশু হাসিব বাবু ও মুজাহিদ। শুক্রবার ভোররাতে তাদের পিতা মাতাসহ ২৪জন ইটভাটা শ্রমিক নারায়নগঞ্জ থেকে দেবহাটাতে ফিরে আসলে ওই দুই শিশুসহ সকলকে সরকারি খানবাহাদুর আহছানউল্লা কলেজে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টানে নেয়া হয়। বর্তমানে বাবা মায়ের সাথেই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে শিশু হাসিব বাবু ও মুজাহিদ।
এদিকে কোয়ারেন্টাইনে থাকা শিশু হাসিব বাবু ও মুজাহিদের বয়স আর দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীনের শিশুপুত্র সোয়াদ’র বয়সও প্রায় একই। সাজিয়া আফরীন যেমন উপজেলার শীর্ষ সরকারি পদস্থ কর্মকর্তা, ঠিক তেমনি একজন মা। মা হিসেবে নিজের শিশুপুত্রের নানান বায়না আর আবদারের কথা বিবেচনা করে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ওই দুই শিশুর খাদ্যের বিষয়টি ভেবে আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন তিনি। একপর্যায়ে শনিবার বাড়ী থেকে নিজের শিশুপুত্রের জন্য কিনে রাখা দুধসহ খাদ্যসামগ্রীর একটি অংশ কোয়ারেন্টাইনে থাকা শিশু হাসিব বাবু ও মুজাহিদের জন্য পৌছে দেন তিনি।
পরে নিজের ফেইসবুক প্রোফাইলে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দেন ইউএনও সাজিয়া আফরীন।তার আবেগঘন স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো, ‘হঠাৎ জানতে পারলাম প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন এ কেবিএ কলেজে রাখা লোকদের মধ্যে দুইটি দুধের শিশু রয়েছে । আর স্থির থাকতে পারলাম না। আমার সন্তান ৩ বছরের সোয়াদ’র বায়নার কথা ভাবছি আর চোখের পানি আটকাতে পারলাম না। দ্রুত দুধ সহ সোয়াদের জন্য কেনা খাবারের একটা অংশ তাদের জন্য পাঠানো হলো। সকল সন্তানেরা ভালো থাকুক তাদের মায়ের বুকে।’