করোনায় দিনাজপুরের খনিতে কয়লা উৎপাদন অর্ধেকে মজুদ সংকটের আশঙ্কা

করোনার প্রাদুর্ভাবে যখন কলকারখানা অফিস আদালত হাট-বাজার শহর বন্দর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে পড়েছে। একই ভাবে এই করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে।

জানা গেছে,করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ছুটি দেয়া হয়েছে কয়লা উৎপাদন কাজে কর্মরত ১১শ স্থানীয় বাঙ্গালী বা বাংলাদেশী শ্রমিকদের। কেবল মাত্র চিনা শ্রমিক দিয়ে উৎপাদন চলছে,এতে প্রতিদিনের কয়লা উৎপাদন নেমে এসেছে অর্ধেকে। ফলে আগামী দুই মাসের আপতকালিন কয়লা জমুদ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্র।

কয়লা খনি সুত্রে জানা গেছে, খনি থেকে প্রতিদিন ৩ হাজার ৫শ থেকে চার হাজার মেট্রিকটন কয়লা উৎপাদন হয়। এবং প্রতি তিন মাস পর পর কয়লার উত্তোলন ফেইজ (সুড়ঙ্গপথ) উন্নায়নের জন্য এক মাস করে উৎপাদন বন্ধ থাকে। এই কারনে তাপ বিদুৎ কেন্দ্রে বিদুৎ উৎপাদনের জন্য আপতকালিন কয়লা মজুদ রাখতে হয়। কিন্তু সম্প্রতিক করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায়, ভাইরাস সংক্রমন রোধে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখেতে কয়লা উত্তোলন কাজে কর্মরত বাঙ্গালী শ্রমিকদের গত ২৬ মার্চ থেকে ছুটি দেয়া হয়েছে। ফলে কয়লা উত্তোলন করছে শুধুমাত্র চিনা শ্রমিকরা, এতেকরে কয়লা উত্তোলন কমেছে অর্ধেক।

সুত্রটি জানায় প্রতিদিন যেখানে কয়লা উত্তোলন করা হতো ৩ হাজার ৫শ মেট্রিকটন থেকে চার হাজার মেট্রিকটন, সেখানে এখন কয়লা উত্তোলন হচ্ছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৪শ মেট্রিকটন, যা প্রতিদিনে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এই কারনে আপতকালিন মজুদ রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে খনি কর্তৃপক্ষের।

খনিটির মাইনিং বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী মে মাস প্রর্যন্ত বর্তমান ফেইজ থেকে কয়লা উত্তোলন চলবে। এরপর নতুন ফেইজ উন্নায়নের জন্য জুন ও জুলাই দুই মাস কয়লা উত্তোলন বন্ধ থাকবে।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আগামী জুন মাস থেকে ফেইজ উন্নায়ন কাজের জন্য কয়লা উত্তোলন বন্ধ থাকবে, সেই সময় আপতকালিন কয়লার মজুদ না হলে, তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী কামরুজ্জামান খান বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাব যেখানে সারা বিশ্বে দেখা দিয়েছে, একই ভাবে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতেও এর প্রভাব পড়েছে, তবে এই আপতকালিন সময়ে তাপ বিদুৎতের উৎপাদন সচল রাখার জন্য খনি কতৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্ঠা করছেন বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদুৎ উত্তরের বেশকটি জেলার বিদুতের চাহিদা পুরণ করে, তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে অন্ধকারে পড়বে রংপুর বিভাগের উত্তরের এই জেলা গুলো।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)