তথ্য গোপন করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি,করোনার উপসর্গ নিয়ে যুবকের মৃত্যু
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়ী গ্রামে ঢাকা নারায়নগঞ্জ থেকে এসে কোয়েরান্টাইনে থাকা অবস্থায় হারুনর রশীদ (২৬) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। করোনা সন্দেহে রক্তের স্যাম্পল সংগ্রহ করেছে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের একটি টিম।এছাড়া আশেপাশের দশটি বাড়ী লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সে উপজেলার ধলবাড়ী ইউনিয়নের ধলবাড়ী গ্রামের ছবেদ আলী সরদারের ছেলে। শনিবার (২৫ এপ্রিল) ভোর ৫ টায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে সে মারা যায়।
মৃত হারুনর রশীদের বোন আজমিন নাহার সুমি জানায়, তার ভাই নারায়নগঞ্জ জেলার মোহাম্মাদবাগ এলাকায় এডিক্সন কোম্পানিতে চাকরি করত। করোনা ভাইরাসের জন্য সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছুটি থাকায় গত ৫ দিন আগে হারুন ও তার স্ত্রী আমেনা পারভীন ধলবাড়ী গ্রামের বাড়িতে আসে।
ওই দিনেই ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শওকত হোসেন তাদেরকে কামারগাতী মাজারে একটি রুমে কোয়েরেন্টাইনে রাখেন। তার পরের দিনেই হারুনর রশীদ কোয়ারান্টাইনে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পরে। এরপর তার পরিবার স্থানীয় ডাক্তার তপন শর্মাকে দেখায়। পরবর্তীতে গতকাল শুক্রবার ( ২৪ এপ্রিল) সন্ধায় আবারও সে গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাকে কোয়ারান্টাইনে থেকে বের করে তার পরিবার। এরপর স্থানীয় ডাক্তার তাপস কুমার পালকে দেখানো হয়। পরবর্তীতে রাত ১২ টার দিকে স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তার স্বজনরা। সেখান থেকে রেফার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। পরবর্তীতে ভোর ৫ টায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে মারাযায় হারুনর রশীদ।
হারুনর রশীদের শারীরিক সমাস্যার কি ছিল গ্রাম্য ডাক্তার তপন শর্মার মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি হারুনকে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয় অস্বীকার করেন। এছাড়া তার লেখা প্রেসক্রিপশন নকল বলে দাবী করেন তিনি।
বিষয়টি জানার জন্য গ্রাম্য চিকিৎসক তাপস কুমার পালের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়াত হোসেন বলেন, তার পরিবার কোয়েরেন্টাইনে থাকার বিষয়টি গোপন করেছিল। সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার কিছু সময় পরেই তার মৃত্যু হয়। এছাড়া তিনি আরও জানান পরবর্তীতে জানতে পারেন তিনি সে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছিল। পরবর্তীতে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাকে তার নমুনা সংগ্রহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তাদের বাড়ি লকডাউন করার জন্য বলা হয়েছে। রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে আসলে তার কি কারণে মৃত্যু হয়েছে।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন,বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রোটকল অনুসরণ করে লাশ দাফন করতে বলা হয়েছে । এবং ওই রোগীর সংস্পর্শে যারা ছিলো তাদেরকে লক ডাউনে রাখতে বলা হয়েছে।